
লালমনিরহাটে দ্বিতীয় স্ত্রী কে খুশী করতে প্রথম স্ত্রী কে হত্যা জেলা পুলিশের প্রেস ব্রিফিং
মোঃ লাভলু শেখ, লালমনিরহাট
লালমনিরহাটে দ্বিতীয় স্ত্রী কে খুশী করতে, প্রথম স্ত্রী কে হত্যা, লালমনিরহাট জেলা পুলিশের প্রেস ব্রিফিং। জানা গেছে, বেড়ানোর কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে নিজ ভ্যান যোগে বাড়ি থেকে বের হয় স্বামী। পথিমধ্যে পানের সঙ্গে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে নির্জন স্থানে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় দেহ থেকে মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করে। পরে বিচ্ছিন্ন মাথা আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর এলাকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি তামাক ক্ষেতে পুঁতে রাখে স্বামী। সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, সংবাদ পেয়ে গত বুধবার ৫মার্চ দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের একটি ভুট্টাখেত থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাতের আঙুলের ছাপ থেকে রংপুরের সিআইডি পুলিশ নিশ্চিত করে, মরদেহটি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর দীঘলটারী গ্রামের আশরাফুল (৫০) এর দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগম (৩৮)। ঘটনার পর থেকে নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসা (৪৫) পলাতক ছিলো। গত শুক্রবার ৭ মার্চ বিকেলে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসাকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেয়। পরে শনিবার ৮ মার্চ মেহেরুন্নেসা কে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁর সতিন হাসিনা বেগমের বিচ্ছিন্ন মাথা পুঁতে রাখার তথ্য দেন। সেই তথ্য মতে জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর এলাকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি তামাক ক্ষেতে পুঁতে রাখা হাসিনার বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্বামী আশরাফুল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক। সে জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর দীঘলটারী গ্রামের বাসিন্দা ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর কুঠীরপার গ্রামের নবাব আলীর ছেলে। নিহত হাসিনা বেগম আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং আদিতমারী উপজেলার দীঘলটারী গ্রামের কাশেম আলীর মেয়ে।
এদিকে রোববার ৯ মার্চ বিকেলে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল লালমনিরহাট শহরের খুটামারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বামী আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত আশরাফুলকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, স্বামী আশরাফুল ইসলাম নিহত হাসিনার সঙ্গে বিয়ে হলে এক কন্যা সন্তানসহ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে দিঘলটারী গ্রামের নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাথে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয়। সেখানেও এক কন্যা সন্তান হলে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার ছেড়ে পুনরায় স্বামী আশরাফুলের কাছে ফিরে আসে হাসিনা। পরে আবারও হাসিনার এক কন্যা সন্তান হয়। বার বার কন্যা সন্তান জন্ম ও অর্থনৈতিক সংকটে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো হাসিনার সংসারে।