
দোহারে হারুন মাস্টার হত্যা মামলায় আটক ১ , হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার
মাহবুবুর রহমান টিপু, দোহার(ঢাকা)
ঢাকার দোহার উপজেলার বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও নয়াবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি্#৩৯;র উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ ওরফে হারুন মাস্টার হত্যা মামলায় জিহাদ চোকদার(২০) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে দোহার থানা পুলিশ। এ সময়ে ধৃত আসামির দখল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত জিহাদ চোকদার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা এলাকার স্বপন চোকদারের ছেলে। ধৃত আসামিকে পুলিশ প্রহরায় মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।মঙ্গলবার বিকেলে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো.আশরাফুল আলম প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানায়, গত ২ জুলাই সকাল অনুমান ৬ টার দিকে দোহার উপজেলার নয়াবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হারুন অর রশিদ ওরফে হারুন মাস্টারকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা মাথায় ও পিঠে লক্ষ্য করে ৬টি গুলি অত:পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাথারি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে মটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে তার পরিবারের লোকজন দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেনিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন উক্ত ঘটনায় নিহত হারুন মাস্টারের ভাই আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে দোহার থানায় ৭ জন এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা ১০—১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন(মামলা নং—০৪, তারিখ—০৫/০৭/২০২৫ খ্রি., ধারা— ৩০২/৩৪)।
মামলার দায়িত্বে থাকা এস আই জোবায়দুল ইসলাম জানান, মামলার বাদী আব্দুল মান্নান এজাহারে উল্লেখ করেনে, দলের দলীয় কোন্দলের কারণে এবং স্থানীয় বালু নিয়ন্ত্রন ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুউদ্দিন মেম্বার ও ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব নাসির উদ্দিনদের সাথে চরম বিরোধ চলে আসছিলো মাষ্টার হারুনের। এছাড়াও হত্যার ঘটনার কিছু দিন পূবেওর্ সামসুউদ্দিন গ্রুপের সাথে হারুন মাষ্টারের লোকজনের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা হলেন পশ্চিম ধোয়াইর গ্রামের সামসুউদ্দিন মেম্বার(৬২), আন্তা গ্রামের নাছির উদ্দিন মেলেটারী(৬২), বাহ্রা গ্রামের হামেদ শিকদারের ছেলে দিপু শিকদার(৪৫), শাহজাহান ভুঞার ছেলে সোহাগ ভুঞা(৩৭),সুন্দরীপাড়া
গনেশের ছেলে মিরাজ(৩৪), ধোয়াইর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে ফারুক(৫৮), শামসুদ্দিন মেম্বারের ছেলে সজিব হোসেন বাবু(৩২) এবং আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা রুজু করা হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় দোহার থানার একটি চৌকস টিম তদন্তে নামে। উক্ত টিম সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় নবাবগঞ্জ উপজেলার নতুন বান্দুরা এলাকা হতে হত্যাকান্ডে জড়িত ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামি জিহাদ চোকদারকে গ্রেফতারপূর্বক তার হেফাজত হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার এবং জব্দ করেন।
দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম আরও বলেন, ধৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে ঘটনার সহিত জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ধুত আসামি জিহাদসহ তার সহযোগীরা মিলে তিন মাস আগেও একবার হারুন মাস্টারকে হত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হউন। পরবর্তীতে দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনায় জব্দ মোটরসাইকেল দিয়ে খুনিরা ঘটনাস্থল রেকি করে এবং সর্বশেষ এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মহসিনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং আসামী মহসিন ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। এ ছাড়া অত্র মামলা তদন্তকালে গত ৬ জুলাই অত্র মামলার এজাহার নামীয় ৬ নং আসামি ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হারুন মাস্টার হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত মোট ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামীরা হলেন— মো.ফারুক হোসেন, মো. মহসিন ও জিহাদ চোকদার। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তারসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার এর জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।