ডার্ক মোড
Sunday, 19 May 2024
ePaper   
Logo
সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন

সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পূর্ব সুন্দরবনের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবাহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার ২০ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

রবিবার (৫ মে) সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।গতো শনিবার (৪ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন গহিন বনে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।আগুন লাগার খবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস এলেও কিছু কারণে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে না পেরে।

রবিবার ভোর থেকে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট।পানির সহজলভ্যতা না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।এদিকে বিবৃতিতে আরও জানানো হয়,আগুন গাছের ওপর বা ডালপালায় বিস্তৃত হয়নি, শুধুমাত্র মাটির ওপর বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তৃত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছেন এবং নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন।এছাড়াও ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিপিজি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণ অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা প্রদান করছেন।

বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও অগ্নিনির্বাপণে উপর থেকে পানি ছিটিয়ে সহায়তা করেছে।প্রসঙ্গত, শনিবার (৪ মে) দুপুর আনুমানিক সাড়ে ৩টায় সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনা প্রথম উদঘাটিত হয়। আগুনের ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বন বিভাগের কর্মীরা স্থানীয় কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় আগুন লাগার চারপাশে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেন।

কিন্তু ওই সময় ভাটার কারণে খালে কোনও পানি না থাকায় আগুনে পানি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে রাতেই বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট ও পানি দেওয়ার মেশিনে এনে সেটি রেডি করে পাইপ লাগিয়ে সেট করে রাখা হয়। আজ ভোর হতেই বন বিভাগের কর্মীরা , ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনগণ, সিপিজি, সিএমসির লোকদের নিয়ে আগুন লাগার স্থানে চারদিকে ফায়ার লাইন কাটার পাশাপাশি পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ পুরোদমে শুরু করেন।

আগুন লাগার স্থানের চারদিকে প্রায় ৫ একর জায়গাজুড়ে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। তবে যেহেতু আগুন মাটির নিচ দিয়ে গাছের শিকড়ের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করছে কাজেই সতর্কতার সঙ্গে আগুন নিভাতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী কয়েক দিন এখানে অগ্নিনির্বাপন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে।

কেননা ফরেস্ট ফায়ার আপাতত নিভে গেছে বা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মনে হলেও আবার যেকোনও সময় এটি নতুনভাবে সৃষ্টি ও বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয়ে তদন্তের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।বলা হয়, এ কর্মকাণ্ড সরেজমিন তদারকি করতে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

তিনি এ বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি ও কর্মপন্থা বিষয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় খুলনায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন