জয়পুরহাট চার্চ্চেস অব গড মিশনের বর্তমান দুর্নীতিগ্রস্থ্য কমিটি বাতিল দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগে জয়পুরহাট চার্চ্চেস অব গড মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড: জন থিওটনিয়াস কস্তা, চেয়ারম্যান ডোনাল্ড দাস ও সেক্রেটারি মিলন দাসের পদত্যাগসহ মাঠ পরিচালক ড: জন কস্তা ও তার সাজানো বর্তমান ফিল্ড কমিটি অবিলম্বে বাতিল করে আইনের আওতায় নিয়ে মিশন পরিচালনার জন্য নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রসাশকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন এখানকার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীসহ সাধারণ জনতা।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে তারা জয়পুরহাট জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ের সামনে মানবন্ধন করেন এবং তাদের কয়েকজন প্রতিনিধি ৩৫টি ক্রমিক আকারে লিখিত অভিযোগ জেলা প্রসাশক
আফরোজা আক্তার চৌধুরী এর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারক লিপিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ১. মানবঅধিকার লংঘন: চার্চ্চেস অফ গড মিশনের গঠনতন্ত্র ও নীতিমালা অনুযায়ী চার্চ্চেস অব মিশন এর সদস্য/সদস্যাবৃন্দকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে চিকিৎসা সেবা ও ফ্রিতে শিক্ষার ব্যবস্থা কওে দেওয়ার বিধান থাকিলেও উপরোক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা: জন কস্তা, সভাপ্রতি ডোনাল্ড দাস ও সম্পাদক এডুইন মিলন দাস কর্তৃক গঠিত অবৈধ কমিটি আমাদের সদস্যগনকে কোন প্রকার ফ্রিতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন নাই কি কোন প্রকার ফ্রি শিক্ষার ব্যবস্থা করেন নাই। ২. ফ্রি চক্ষু চিকিৎসার জন্য আসা অনুদান আত্মসাৎ করন। ৩. শিক্ষার দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করা। ভুয়া ছাএ-ছাত্রী দেখিয়ে শিক্ষা অফিস থেকে বই উত্তোলন করা। মিশনের স্কুলগুলো মেরামত না করা। শিক্ষার মান অচল করার কারনে মিশনের জয়পুরহাট জেলার ৮টি স্কুলের ৩-৪টি চলমান আছে। বাকী স্কুলগুলোর বই দিবে না শিক্ষা অফিস। ৪. দাতা সংস্থাকে ভুয়া রির্পোট দেখিয়ে টাকা নেওয়া। ২০২০ সালে ২০টি স্কুলে ৭৫০টি বাচ্চা। খনজনপুর হোষ্টেলে ১৫৫টি ছেলে-মেয়ে এবং বগুড়া ও জয়পুরহাটে ১২০,০০০ জন চক্ষু রোগী দেখা। যা পুরোপুরি মিথ্যা। ৫. স্বজনপ্রীতি। ডা: জন কস্তা অবৈধভাবে শান্তি দেওয়ানের মেয়ে রুপাকে বিয়ে না করে একসাথে থাকে (এই বিষয়ে খনজনপুর খ্রীষ্টিয় চার্চে বিচার করে কিছু করতে পারি নাই) এবং রুপাকে ৫০ লক্ষ টাকা মিশনের ব্যয় করে খনজনপুরে বাড়ি করা। তার সাথে রুপাকে মিশনে চাকুরী দেওয়া, রুপার বাবাকে (শান্তি দেওয়ান) চাকুরী দেওয়া, রুপার ভাইকে (অভি দেওয়ান) ও ভাইয়ের বউকে চাকুরী দেওয়া বর্তমানে তারা উভয়ই চাকুরীরত আছে এবং উভ্যাই অধিক বেতন পাই অন্যান্য দীর্ঘদিন যাবৎ চাকুরী করে তাদের থেকে অনেক বেশী। শান্তি দেওয়ানের চাকুরীর মেয়াদ শেষ করেও ১০ বছর ধরে চাকুরী করতেছে। ৬. অবৈধ কমিটি: উপরোক্ত ডিরেক্টর, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ এনজিও বিষয়ক ব্যুরো হইতে নির্দেশ আসার পরেও কোন প্রকার নির্বাচন ছাড়া এবং অপরাপর সদস্যদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে অএ অবৈধ কমিটি গঠন করে রেখেছে আওয়মীলীগের ছায়াই। এমনকি উক্ত বিষয়ে প্রতিবাদ করার কারনে কর্মরত সদস্যগনকে চাকুরীচ্যুত করিয়াছেন। অথচ ডিরেক্টর, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেওই আমাদের চার্চের সদস্য না। তারা বহিরাগত, আমরা চাই না। আমাদের মিশন আমাদের চার্চের সদস্য দারা কমিটি হবে। ৭. পাঁচ বছরের বেশী সময় ধরে কমিটিতে থাকা ও ২০৩০ সাল পর্যন্ত নবায়ন করা। বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার পাঁচ বছরের বেশী থাকতে পারে না। ৮. তাদের বিরোধিতা করলে কোন রকম কারন ও বেতন ব্যতিত চাকুরীজীবিদের চাকুরীচ্যুত করে বিভিন্ন মামলা দেওয়া। ৯. বৃক্ষ রোপনের নামে ভুয়া কাগজপএ দেখিয়া টাকা আত্মসাৎ। ১০. গভীর নলকূপ ও পায়খানা দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ। দীর্ঘ ১০ বছরে এই রকম কোন কাজ করে নাই। ১১. ২০১৪ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দাতা সংস্থার (USA) ও লোকাল আয় থেকে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর থেকে ৬৮ কোটি অর্থছাড় এছাড়াও ২০১৪ হতে ২০২৪ ANDHERI HILFE জার্মানি দাতা সংস্থার থেকে বছরে আনুমানিক ১ কোটি করে মোট ১০ বছড়ে ১০ কোটি। সর্বমোট: ৭৮কোটি টাকা আত্মসাৎ করা। ৭৮কোটি টাকার হিসাব চাই। ১২. সংস্কারের নামে টাকা আত্মসাৎ। ১৩. ৩টি জেলায় ১৭টি উপজেলায় কাজ করার নামে অনুদান গ্রহন করে ১টি জেলা, ১টি উপজেলায় কাজ করে বাকী অর্থ আত্মসাৎ করে। যাহার কারনে বাংলাদেশ এনজিও বিষয়ক ব্যুরো উক্ত কমিটিকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন। ১৪. ভূয়া চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা প্রদান করে অর্থ আত্মসাৎ। ১৫. সভাপতি ডোনাল্ড দাস এল.এল, বি হইলে সে কিভাবে সভাপতি হইল। ১৬. ডিরেক্টর ডা: জন কস্তার সার্জন লাইসেন্স কে দিল। ১৭. নিজের আত্মীয় স্বজন দিয়ে মিশন পরিচালনা করা ও অর্থ আত্মসাৎ করা। ১৮. কমিটির বিরুদ্ধে কথা বলায় বিভিন্ন জনকে রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করা ও হয়রানী করা এবং বিভিন্ন মামলা দিয়া জেরবার করা। ১৯. বর্তমান কান্ট্রি ডিরেক্টর, প্রাক্তন ডিরেক্টরর প্রধান সহজোগী ছিলেন এবং তাহার সাথে দূর্নীতিতে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন। ২০. ইচ্ছামত কর্মচারী ছাটাই ও নিয়োগ প্রদান করা এবং সাবেক ম্যানেজারকে কারন ছাড়াই চাকুরী হতে অব্যহতি দেন যাহা সম্পর্ণ বেআইনী ভাবে। এছাড়াও এখন পর্যন্ত তার পাওনা টাকা না দিয়ে মামলা দিয়া জেরবার করা। ২১. একই প্রকল্প দেখিয়ে জার্মানি ও ইউএসএ থেকে একই খাতে দ্বিগুন টাকা আত্মসাৎ করা। ২২. কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা: জন কন্তা সংস্থার বিভিন্ন প্রজেক্ট হইতে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে অর্থ উত্তোলন করিয়াছেন যাহা Audit Report পরিলক্ষিত হয়। ২৩. EX-Director উত্তম দেওয়ানের আত্মসাৎকৃত টাকার কোন প্রকার হিসাব না নিয়েই পরবর্তী কমিটি তাহাকে সম্মানের সহিত চক্রান্ত করিয়া পলায়নে সহায়তা করিয়াছেন এবং উক্ত আত্মসাৎ এর সহিক বর্তমান কমিটির সবাই প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। এছাড়া আগের কমিটির সদস্যয় বর্তমান কমিটির সদস্য। ২৪. চার্চ্চেস অফ গড মিশনের স্টাফদের ছেলে-মেয়েদের কোন বৃত্তি/ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন নাই। কিন্তু চার্চ্চেস অফ গড মিশনের নীতিমালায় বলা আছে যে স্টাফদের ছেলে-মেয়ে বৃত্তি/ভাতা পাবে। এই টাকাও আত্মসাৎ করে। ২৫. চার্চ্চেস অফ গড মিশনের স্টাফদের বেতন ভাতা সম্নানজনক হারে দেওয়ার কথা আছে। স্টাফদের বেতন শিক্ষক-৫৬১০/- চাকুরীর সময়কাল এখন পর্যন্ত ৩৫ বছড়, পালক/মাঠকর্মী-৫০১৪/- চাকুরীর সময়কাল এখন পর্যন্ত ২০ বছড়। আবার নিজের লোকদের বেশী বেতন দেয়। অথচ সে আনুমানিক ২.৫ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ বেতন বিভিন্ন ক্ষাত থেকে। ২৬. হোটেলের খাবারের মান ভাল না। প্রায় দিনই সবজি ও ডাল দেয়। ২৭. কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা: জন কস্তা, সভাপ্রতি ডোনাল্ড দাস ও সম্পাদক এডুইন মিলন দাস আমাদের স্থানীয় না। আবার আমাদের চার্চের সদস্য না। কিন্তু তারা উভয়ই এফসি বোর্ডের প্রধান পোষ্টধারী। চার্চ্চেস অফ গড মিশনের ১০০ বছড়েড় ইতিহাসে এরকম হই নাই। চার্চেস অফ গড মিশনের নীতিমালার পরিপন্থি। আমরা আমাদের চার্চেস অফ গড মিশনের সদস্য দারা মিশন পরিচালনা করব। ২৮. এফসি বোর্ডের সদস্য হলে স্টাফ হতে পারবে না যাহা চার্চেস অফ গড মিশনের নীতিমালার পরিপন্থি। ২৯. কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা: জন কস্তা, সভাপ্রতি ডোনাল্ড দাস ও সম্পাদক এডুইন মিলন দাস আমাদের ফিল্ড ভিজিট করে না। ৩০. সামাজিক উন্নয়নমূলক কোন কার্জকম কওে না। আমাদের বড়দিনের অনুষ্ঠান করার জন্য জায়গা দেয় নাই। যাহা ধর্মীয় কাজে বাধা দিয়েছে। ৩১. হাঁস-মুরগী, গবাদি পশু পালন প্রশিক্ষন এর নামে অর্থ আত্মসাৎ করা। ৩২. আঙ্গিনায় বাগান প্রশিক্ষন এর নামে অর্থ আত্মসাৎ করা। ৩৩. ভুয়া অডিট রির্পোট এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে প্রদান। যেমন-তেল খরচ, ঔষধ ক্রয়, স্টাফ চিকিৎসা, বিল্ডিং মেরামত, প্রশিক্ষন, আইনী খরচ, রোগী অনুসন্ধান আরও অনেক খরচের কথা অডিট রির্পোটে উল্লেখ রয়েছে। যা কখনও দৃশ্যমান হই নাই। ৩৪. কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা: জন কস্তা, সভাপ্রতি ডোনাল্ড দাস ও সম্পাদক এডুইন মিলন দাস সহ কমিটির সকলের ব্যাংক হিসাব চেক করতে হবে। এছাড়াও শান্তি দেওয়ান, রুপা, অভি ও হিসাব রক্ষকের ব্যাংক হিসাব চেক করতে হবে। ৩৫. আমাদের বিষয়টি আর্মি দারা নিসপত্তি চাই। অতএব, বিধায় প্রার্থনা উপরোক্ত বিষয়গুলির আলোকে এই কমিটি বাতিল করেতে হবে এবং নতুন কমিটির পারমেশন দিতে হবে। অন্যথাই আমরা দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন এর ঘোষনা দেওয়া হল।
উক্ত মানববন্ধনে মিশনের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির লুনা চক্রবর্তী, সুজিত টুডু, শিল্পী গমেজ, সপন তপ্নসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।