Dark Mode
Monday, 21 July 2025
ePaper   
Logo
'পায়রা বন্দর হবে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি' -নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

'পায়রা বন্দর হবে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি' -নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

গোফরান পলাশ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, 'পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে  পায়রা বন্দর হবে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। তাই আমাদের উচিত বাস্তবভিত্তিক ও টেকসই পরিকল্পনার মাধ্যমে বন্দর ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও কার্যকর করে তোলা। পায়রা বন্দরকে এ অঞ্চলের জন্য সাসটেইনেবল করতে হবে। আমি মনে করি একটি পোর্টের নিজস্ব ড্রেজার থাকা দরকার। বাংলাদেশে এমন কোন পোর্ট নাই যেখানে ড্রেজিং না হয়। আশা করছি আগামী দুই এক মাসের মধ্যে পায়রা বন্দরের ড্রেজার এবং ড্রেজিংয়ের স্যাংশন করাতে পারবো। একটা বন্দরের জন্য ১০ বছর কিছুইনা। ২০ বা ২৫ বছর হলে বলা যাবে যে এটার কাজ শুরু হয়েছে।' রবিবার বিকেলে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌর শহরের অভিজাত হোটেল সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলাস'র হল রুমে পায়রা বন্দরের 'মাস্টার প্ল্যান অব পায়রা পোর্ট' সেমিনার শেষে  সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত বলেন, '‘ভৌগলিক অবস্থান, সরলরৈখিক ও প্রশস্ত চ্যানেল, বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং দেশের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলে একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তোলার লক্ষ্যে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বন্দর ব্যবহারে আধুনিক ইক্যুইপমেন্ট সমৃদ্ধ ৬৫০ মিটার দীর্ঘ জেটি সুবিধা থাকছে । তিন লাখ ২৫ হাজার বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড সুবিধা, দশ হাজার বর্গমিটার আধুনিক সিএফএস, সুপ্রশস্ত ও সরলরৈখিক চ্যানেলে নিরাপদ নেভিগেশন সুবিধা থাকছে। ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন কার্গো বোঝাই ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩২ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট প্যানামেক্স আকৃতির জাহাজ চলাচলের সুবিধা থাকছে। ৩০০০-৩৫০০ টিইউএস কন্টেইনার) সুবিধা। জটবিহীন বার্থিং/আন-বার্থিং সুবিধা রয়েছে । একই সঙ্গে ইনার চ্যানেলে ১৫টি বাণিজ্যিক জাহাজের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা থাকছে। সড়ক পথে কার্গো পরিবহনে থাকবে যানজটবিহীন সুবিধা। বন্দরটি আগমি ২০২৬ সালের জুলাই মাসে প্রথম টারমিনাল অপারেশনাল করার লক্ষ্য নিয়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে।এই বন্দর থেকে প্রযুক্তিবান্ধব অটোমেটেড অপারেশন ও স্মার্ট গ্রাহক সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

এর আগে মাষ্টারপ্ল্যান বিষয়ক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোর্ট রয়েছে। অথচ আমাদের দেশে যখন একটি নতুন পোর্ট গড়ার বা চট্টগ্রাম পোর্টর পাশে আরেকটি পোর্ট তৈরির কথা বলা হয়, তখনই বলা হয় দেশ চলে গেলো। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে যদি কোনো অপারেটর নিয়োগের কথাও ওঠে, তখনও বলা হয় দেশ চলে গেলো। বিষয়টি এমন যেন চিলে কান নিয়ে গেছে, আর সবাই দৌড়াচ্ছে।'
 
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, সামরিক ও বেসামরিক সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বন্দর ব্যবহারকারী-অংশীজন, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও নেদারল্যান্ডের রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভি এর প্রতিনিধিগণ এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল। তিনি ২০২৬ সালের জুলাই মাস হতে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল অপারেশনাল করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার প্রস্তুতি ও সহযোগিতা আহবান করেন। এছাড়া ড্রেজিংসহ অত্যাবশ্যক কয়েকটি কাজ সম্পাদনে তিনি সরকারের সহায়তা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে পায়রা বন্দরের মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের উপর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন বুয়েট টিমের লিড কনসালটেন্ট অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহমেদ। এরপর পায়রা বন্দরের মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের নেদারল্যান্ডসভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভি এর টিম লিডার মেনো মুইজ (Mr. Menno Mooij) মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের পায়রা বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ভবিষৎ পরিকল্পনা নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেন। সেমিনারের দ্বিতীয় সেশনে বিভিন্ন অংশীজনের পক্ষ হতে মাস্টার প্ল্যান ও সামগ্রিকভাবে পায়রা বন্দরের অগ্রগতি বিষয়ক মন্তব্য ও পরামর্শ প্রদান করা হয়।

বন্দরটিকে আধুনিক ও কার্যকর করে গড়ে তুলতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান HR Wallingford এর মাধ্যমে একটি Feasibility Study সম্পন্ন করা হয়। এই গবেষণার ভিত্তিতে পায়রা বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমকে ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্টে বিভক্ত করে প্রতিটি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট ছিল 'Conservancy and Port Management'। এর আওতায় বন্দর প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে 'Development of Infrastructure Support Facilities (DISF)' নামক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। DISF প্রকল্পের একটি মূল উপাদান হলো 'পায়রা বন্দরের ডিটেইল মাস্টারপ্ল্যান' প্রণয়ন।

 

Comment / Reply From

Vote / Poll

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?

View Results
হ্যাঁ
0%
না
0%
মন্তব্য নেই
0%

Archive

Please select a date!