ডার্ক মোড
Friday, 01 November 2024
ePaper   
Logo
শীতলক্ষ্যা দূষণরোধে সবাইকে কাজ করতে হবে: পরিবেশ ডিজি

শীতলক্ষ্যা দূষণরোধে সবাইকে কাজ করতে হবে: পরিবেশ ডিজি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ বলেছেন, ‘আমাদের উপদেষ্টা (পরিবেশ মন্ত্রণালয়) মহোদয়ের ভিশন হচ্ছে এই প্রজন্মকে একটা দূষণমুক্ত নদী দেখানো। আমাদের দেশে কি দূষণমুক্ত কোনো নদী আছে? কেউ কি আমরা দেখাতে পারবো। প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। আর কত মিটিং করবো আমরা। শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ কমাতে সবাইকে কাজ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের সাপোর্ট আমরা দেবো।’

শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘নারায়ণগঞ্জের নদীগুলোর দূষণ রোধে’ আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে এই সময় সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক সংগঠন, সাংবাদিক, নাগরিক ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নদীর পানি দূষণের বড় একটি অংশের জন্য দায়ি বলে বিভিন্ন বক্তার আলোচনায় উঠে আসে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশের মহাপরিচালক বলেন, ‘নাগরিকদের প্রত্যাশা ছোটোখাটো কয়েকটা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রশ্নের সম্মুখীন হলে তা দেখা দরকার। আমরা (পরিবেশ অধিদপ্তর) কাউকে ইটিপি করে দেই না। কিন্তু কোনো প্রকার সহযোগিতা লাগলে আমরা তা দেবো। আপনারা তো উদ্যোক্তা। আইন অনুযায়ী কিছু বাধ্যবাধকতার মধ্য দিয়ে তো আপনাদের যেতে হবে। একটা বিধির মধ্যে সকলকে আসা উচিত। ছোট ডাইংগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। বড় কারখানাগুলোকে একটা সিস্টেমের মধ্যে আমরা আনতে পারি কিন্তু ছোটগুলোর ব্যাপারে ভাবতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি সেক্টরে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। সবকিছু তো আর আইনকানুনে হয় না, জনসচেতনতারও প্রয়োজন হয়। শুধুমাত্র ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিলেই যে দূষণ বন্ধ হয়ে যাবে, ব্যাপারটা তা না। সুতরাং দেশের পরিবেশ রক্ষায় সকলের ভূমিকা প্রয়োজন।’

এ প্রসঙ্গে নিট পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘যারা নিয়মকানুন না মানবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে বিকেএমইএ ব্যবস্থা নিবে। তবে, সরকারেরও কিছু বিষয় দেখা প্রয়োজন। ইটিপির জন্য যেসব কেমিক্যাল আনা হয়, তাতে ডিউটি চার্জ করা থাকে। এই চার্জগুলো ফ্রি করতে হবে। তাছাড়া, খালের মুখে ইটিপি স্থাপন করা যেতে পারে।’

ডিএনডি প্রকল্প প্রসঙ্গে আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ডিএনডি পরিকল্পনা ১৯৬২ সালে করা হয়েছিল। নিচু এলাকার খালগুলোকে এমনভাবে তৈরি হয়েছিল যে পানিগুলো অটোমেটিক নেমে যাবে। কিন্তু আমরা খালগুলোকে দখল, দূষণ ও ভরাট করেছি। মানুষ ও ইন্ডাস্ট্রি বাড়ায় পানির ব্যবহার বেড়েছে কিন্তু পানি নষ্টও করা হয়েছে।

‘সেন্ট্রাল ইটিপির কথা উঠেছে। এগুলো কিন্তু এভাবে কাজ করে না। আমরা একটা প্রস্তাব চাইবো। ডিএনডি এলাকায় সিইটিপির জন্য প্রকল্প হিসেবে নিলে এটা একটা ভালো প্রজেক্ট হতে পারে। প্রজেক্ট ফান্ডিং এর ব্যবস্থা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা করবে। তবে, কিছু চ্যালেঞ্জের জায়গা ফিল্ড লেভেলে দেখা যায়। নৈতিকতার প্রশ্নে আমাদের পরিষ্কার হওয়ার সময় এসেছে। কেননা সিইটিপির কনসেপ্টে আমাদের খারাপ অভিজ্ঞতা আছে। একটা এলাকায় বাস্তবায়ন করে সেইটাকে আমরা মডেল এলাকা হিসেবে দেখাতে পারি, যোগ করেন তিনি। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে তাগিদ দেন মহাপরিচালক।

পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন-সরকারি সংস্থা থেকে নদীকে রক্ষা করতে হবে।শীতলক্ষ্যা নদীর বিভিন্ন স্হানে দেখা যায় অকেজো নৌযান অপসারণ করে নদীর পরিধি বাড়াতে হবে।নদীর নব্যতার জন্য নদীকে খনন করে পরিকল্পিত ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প বাস্তবনায় করার আহবান জানান।

এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ডিএনডি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মেজর এসএম সাকিব আজওয়াদ, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু,পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন, বিডি ক্লিন নারায়ণগঞ্জের সমন্বয়ক এস এম বিজয়,প্রথম আলো পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মজিবুল হক পলাশ, খোলা কাগজ ও ঢাকা পোস্ট পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি মীমরাজ হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন