ডার্ক মোড
Wednesday, 08 October 2025
ePaper   
Logo
একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে: সালাহউদ্দিন

একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে: সালাহউদ্দিন

নিজ্বস প্রতিনিধি 

একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে যে বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত তা হচ্ছে, পৃথিবীতে তিনটি শক্তি আমাদের এখানে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। দুটি আঞ্চলিক শক্তি, পরাশক্তিও বটে তারা এবং একটি বিশ্ব মোড়ল। সবাই এখানে একটা হেজিমনি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকের ইন্টারেস্ট আলাদা আলাদা। কিন্তু আমাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তিনটির দ্বারা একইভাবে।’

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘মত প্রকাশ থেকে মৃত্যু: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের বিস্তার ও প্রতিরোধ' শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে।’

আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাসিত জীবনে এই একটি ঘটনায় এত বেশি ব্যতীত হয়েছিলাম, চিন্তা করেছিলাম বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্ররা, যারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, জনগণের পক্ষে, দেশের পক্ষে কথা বলে, তাদের সংখ্যা তো নেহায়েত কম নয়!’

‘সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম, এভাবে বাংলাদেশে হয়তো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলা যেত কোনো না কোনোভাবে। হয়তো তাকে জেলে যেতে হতো, নির্যাতিত হতে হতো, গুম হতে হতো। কিন্তু ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে জীবন দিতে হতো, এটা আমরা তখন বুঝেছি। সেই কারণে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে, যাতে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা না বলতে পারে। উচ্চকণ্ঠ না হতে পারে।’

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থান পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংগ্রাম একইসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থানের সিঁড়ি নির্মাণ করেছি আবরারের মতো শহীদদের রক্ত দিয়ে। ৪২২ জনের বেশি ছাত্র, যুব, বিএনপি নেতাকর্মীর রক্ত এই সিঁড়ির ভিত্তি। এই সংগ্রাম শুধু কোনো দলীয় নয়, বরং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন।’

‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতিতে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ— এই নীতি আমরা এ জন্যই ঘোষণা করেছি যে এই তিনটা শব্দের মধ্যে সারা বাংলাদেশ জীবিত থাকবে। সারা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ নিহিত থাকবে। এই তিনটা শব্দের মধ্যেই আমরা উজ্জীবিত হবো স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে। যদি আমরা এ নীতিতে একমত হই, তাহলে জাতি আর পথভ্রষ্ট হবে না।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে হলে ছাত্রসমাজকে মেধা, তাত্ত্বিক জ্ঞান ও দেশপ্রেমে সমৃদ্ধ হতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ছাত্র সংগঠনগুলো মেধাবীদের নেতৃত্বে আসুক। যারা কলম দিয়ে, চিন্তা দিয়ে, প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। যদি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম ও তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, তাহলে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দৃঢ়ভিত্তি গড়ে তুলবে।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বার্থে অসংখ্য মানুষকে রক্ত দিতে হয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতে যেন আর রক্ত দিতে না হয়, সে লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

‘আমরা চাই না মুক্তির মন্দিরে নতুন প্রাণ বলিদান হোক। কিন্তু যদি গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা বিপন্ন হয়, তাহলে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। তবে সেই পরিস্থিতি যেন আর না আসে, সেজন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন