
মধুপুর সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়ে দুদকের অভিযান
এ.বি. রাজ্জাক
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের নিবন্ধনে গ্রাহক হয়রানি এবং ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।
গত (৫ অক্টোবর) দিনভর তদন্ত করে রাত ৯টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন টাঙ্গাইল দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক নূরে আলম।
এর আগে, গত ১ অক্টোবর দৈনিক পএিকা গুলোতে ‘মধুপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভোগান্তির শিকার সেবাগ্রহীতারা, শীর্ষক খবর প্রকাশিত হলে তদন্তে নামে টাঙ্গাইল দুদক।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গেল মাসের ২৮ সেপ্টেম্বর ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় আয়েজ উদ্দিন ও তার অপর ৬ অংশীদার জমি দলিল করতে পারেননি। ৮১ বছর বয়স্ক জমি বিক্রেতা আব্দুল মজিদকে নিয়ে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে টানা চার ঘন্টা অপেক্ষা করে দলিল নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন তারা। পরে তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা রেজিস্ট্রার ও দুদকে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আয়েজ উদ্দিন আজাদসহ সাতজন অংশীদার মিলে মালাউড়ী গ্রামের আব্দুল মজিদের নিকট থেকে ছয় শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে নগদ এক লাখ টাকা বায়না করেন। ওই জমি হলো মধুপুর পৌরশহরের মালাউড়ী মৌজার ২২ নম্বর এস. এ. খতিয়ান এবং বি.আর.এস ৭০৬ খতিয়ানের ১১৫ নম্বর এসএ দাগের এবং বি.আর.এস ৭৪৩ নম্বর দাগের ছয় শতাংশ জমি। জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা ও তার সন্তানেরা মিলে ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার জমির দলিল নিবন্ধন করতে মধুপুর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে যান। দলিলের সম্পাদনের যাবতীয় কাজ শেষ হওয়ার পর জমি বিক্রেতা বার্ধক্যজনিত কারণে অফিসের দোতলায় উঠতে না পারায় নিচ তলায় হুইল চেয়ারে টানা ৮ ঘণ্টা বসে থাকেন। সাব-রেজিস্ট্রার অঞ্জনা রাণী দেবনাথ বিক্রেতাকে অফিসে না ডেকে ভেন্ডারদের মাধ্যমে ক্রেতার নিকট ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দিলে দলিল হবে না বলে জানিয়ে দেন। পরে ক্রেতা ও বিক্রেতা দলিল করতে না পেরে ফিরে যান। ক্রেতা ঘুষ চাওয়া এবং হয়রানির অভিযোগ এনে জেলা রেজিস্ট্রার এবং দুদকের নিকট প্রতিকার চেয়ে পিটিশন দেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিনে তদন্তে নামেন দুদক টাঙ্গাইলের সহকারী পরিচালক নূরে আলম ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল বাছিদ। তারা রোববার সারাদিন জমির ক্রেতা, বিক্রেতা, দলিল লেখক, ভেন্ডার ও সাব-রেজিস্ট্রার অঞ্জনা রাণী দেবনাথের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে তদন্ত শেষে দুদক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’
অপরদিকে টাঙ্গাইল জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, অভিযোগের বিষয়ে একটি বিভাগীয় তদন্ত হবে।