লাকসামে পিএফজির আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
"সংঘাত নয়, শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি” এই শ্লোগান নিয়ে কুমিল্লার লাকসামে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে লাকসাম উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ওই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়ক সৈয়দ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ও পিএফজি লাকসাম ইউনিটের সমন্বয়ক জাফর আহমেদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ, ত্রিপিটক পাঠ ও জাতীয় সংগীত এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সংলাপে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) লাকসাম ইউনিটের পিস এম্বাসেডর এড. বিকাশ চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিয়া বিনতে আলম।
উক্ত সংলাপে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের এমআইপিএস প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেন ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর খোদেজা বেগম। সম্প্রীতির অভিযাত্রা বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করেন ইয়ুথ গ্রুপের সমন্বয়কারী নুরুনন্নবী মোহসীন এবং ঘোষণাপত্র পাঠ করেন পিএফজি সদস্য মীর মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, গাজিমুড়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ ড. আমিনুল ইসলাম, ফুলগাঁও ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইয়াসিন মজুমদার, আল জামিয়াতুল আবরার মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মো. ইউসুফ, হাউজিং স্টেট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. খোরশেদ আলম, মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম, পিএফজির এম্বাসেডর মো. সিরাজুল হক, সাবেক এম্বাসেডর মোবারক হোসেন ভূঁইয়া, মজলিশপুর ধর্মকোরা বুদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞা জ্যোতি মহাথেরো, অধ্যাপক অমর ভট্টাচার্য, চন্দন ব্যানার্জি, ইস্কন পরিচালক স্নিগ্ধ কৃষ্ণ দাস, ইসলামী ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার মো. আনোয়ার হোসেন, পিএফজি সদস্য সাংবাদিক আরিফুর রহমান স্বপন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, পিএফজি লাকসাম ইউনিটের পিস এম্বাসেডর নাজমুন নাহার নুপুর, নিমাই সাহা, নূরে আলম মানিক, পিএফজির সদস্য প্রবীর সাহা, রতন লাল দাস, পলাশ বৈষ্ণব, গোপাল সাহা, সাংবাদিক মো. কামাল উদ্দিন, সেলিম চৌধুরী হিরা, আফরাতুল করিম রিমু, উপজেলা দুপ্রক সাধারণ সম্পাদক আওরঙ্গজেব খান রুবেল, মো. মামুন হোসেন, ইউথ গ্রুপের সমন্বয়ক তাসলিমা আক্তার, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) লাকসাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শাহীন, লাকসাম উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও লাকসাম পৌরসভার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, খতিব, মন্দিরের পুরোহিতগণ, বৌদ্ধ ধর্মের ধর্মীয় গুরুগণ, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে একটি শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। বিশ্বের বুকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাবান রাষ্ট্র হিসেবে আমরা আমাদের প্রিয় স্বদেশকে গড়ে তুলতে চাই। গড়তে চাই একটি মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ। যেখানে প্রতিটি মানুষ থাকবে নিরাপদ, প্রত্যেকের ধর্ম, সংস্কৃতি বা বিশ্বাস অক্ষুন্ন রেখে মর্যাদার সাথে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন নিশ্চিত হবে। আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠান থেকে সকল অংশগ্রহণকারী ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ মুক্ত সামাজিক সম্প্রীতির লাকসাম গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা ওই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।