ডার্ক মোড
Tuesday, 18 March 2025
ePaper   
Logo
রাজশাহী কালেকশনে কোটি কোটি হিরোইন ব্যবসার মাল বহন করছে নারীরা

রাজশাহী কালেকশনে কোটি কোটি হিরোইন ব্যবসার মাল বহন করছে নারীরা

এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া, সিলেট

মাদক বা চোরা কারবার অভিযান প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত হলেও বেশিরভাগ অভিযানে বহনকারীর নামেই মামলা হয়ে থাকে আর এতে করে পার পেয়ে যায় গডফাদাররা। মাদক বিরোধী অভিযানে দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় সিলেটে ও হিরোইনের কোন চালান আটক হয়নি বেশ কিছুদিন থেকে বলে নিশ্চিত করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, সিলেট জেলা পুলিশ, সিআইডি, কাস্টম, সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তাদের অনেকেই।

এতে করে সেবনকারীর সংখ্যা ও নাই বললেই চলে। যারা হিরোইনের মত মাদক সেবন করতেন তারা ইয়াবা ট্যাবলেট বা অন্য কোন মাদকের দিকে আসক্ত হয়ে গেছেন হিরোইনের বাজার না থাকাতে। এক সময় সিলেটে হিরোইন সম্রাট কবির সহ অনেক জনপ্রতিনিধি,সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর, তৎকালীন সরকারদলীয় অনেক নেতা ও ক্যাডারা এই ব্যবসা পরিচালনা করতো। হিরোইন ব্যবসার সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে সিলেটে অনেক সাংবাদিক হামলা - মামলা ও অপহরণের মতো ঘটনা র শিকার ও হয়েছেন। যা বর্তমানে সিলেটে মাদকের বিলুপ্ত পণ্য হিসেবে হিরোইন কে সবাই মনে করলেও নিরবে চলছে হিরোইন ব্যবসার এই হাট সিলেটের মৌলভীবাজার তথা কুলাউড়া অঞ্চলে।কুলাউড়ার এক মহিলা হিরোইন ক্রয় করতে গিয়ে রাজশাহীতে আটক হওয়ায় ৫ কোটি টাকার হিরোইন সহ এমন ধারণা তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে।

সম্প্রতি রাজশাহী জেলা পুলিশের অভিযানে পাঁচ কোটি টাকার হিরোইন সহ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানা রবির বাজার এলাকার পৃথিমপাশার এক বয়স্ক নারী রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানা এলাকায় আটকের পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। রাজশাহীর ওই মহিলার কাছ থেকে কুলাউড়ার মহিলা ৫ কোটি টাকা হিরোইন ক্রয় করে নিয়ে আসছিল সিলেটের উদ্দেশ্যে পথিমধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ। অভিযানে ৫ কোটি টাকার হিরোইন আটকের পর জানা যায় রাজশাহী -সিলেট কালেকশনে চলছে হিরোইন হাট। ব্যবসার কৌশল হিসেবে মাদকদ্রব্য হিরোইন বহন করছে বয়স্ক নারীরা।

রাজশাহী জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী মডেল থানা এলাকার সুলতানগঞ্জ গাঙ্গো বাড়ি রোড পাড়া থেকে গাড়ির জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় রাজশাহী টু চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক এর মসজিদের সামন থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী মডেল থানায় এলাকার সুলতানগঞ্জ গাঙ্গো বাড়ি গ্রামের মোহাম্মদ আবুল কাশেমের স্ত্রী নাজমা বেগম (৫৩) সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার দক্ষিণ লংলার পৃথিমপাশা গ্রামের মৃত আলমের স্ত্রী তাহমিনা বেগম মিনু (৫৫) কে ৫ কোটি টাকার হিরোইন সহ আটক করেন গোদাবাড়ি মডেল থানা পুলিশের চৌকস অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রুহুল আমিন। অভিযানে ওসির সাথে এস,আই রফিকুল ইসলাম সহ অনেকেই ছিলেন। এ সময় তাদেরকে তল্লাশি করে তাদের হেফাজতে রাখা ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৫ কেজি হিরোইন পাওয়া যায়।

আটকদের বিরুদ্ধে মাদক দেখবো নিয়ন্ত্রণ আইনে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আটক তাহমিনা বেগম মিনুর বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় পূর্বে থেকে কোন মাদক মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে কুলাউড়া সার্কেলের অ্যাডিশনাল এসপি কামরুল হাসান জানান, কুলাউড়ার পৃথিমপাশা গ্রামের তাহমিনা বেগম মিনুর বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় এ ধরনের কোন মামলা নেই। পুলিশের কাছে সে পরিচিত না।

এতে করে ধারণা করা হচ্ছে তাহমিনা বেগম মিনু বয়স্ক নারী থাকায় ব্যবসার কৌশল হিসেবে তাকে দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা মাল বহন করাচ্ছে। তবে শুধু বহনকারীদের বিরুদ্ধে নয় প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারের মুখোশ উন্মোচন চায় সচেতন জনতা। রাজশাহী জেলা পুলিশের এসপি ফারজানা ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে যোগদানের পর থেকে রাজশাহীতে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে। ২৫ তম বিসিএস এর এ কর্মকর্তা জানান, কাজ করছি একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নারী হিসেবে নয়। গোদাগাড়ী মডেল থানা এলাকায় ৫ কোটি টাকার হিরোইন আটকের অভিযান আমাদের নিয়মিত ধারাবাহিক অভিযানের অংশ বিশেষ।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন