
ফুলবাড়ীতে দিনে গরম রাতে ঠান্ডা, জ্বর-সর্দি-কাশির প্রদুর্ভাব
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দিনে গরম রাতে ঠান্ডা, ব্যাপকহারে সর্দি, জ্বর, কাশির ও পেটের পীড়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সব বয়সী মানুষের অসসুস্থার মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। অধিকাংশ মানুষই পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতালে যাচ্ছে।
উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের পানিকাটা গ্রামের সোলায়মান মন্ডল বলেন, বাড়িতে ছোট নাতনির আজ তিন দিন ধওে জ¦ও বাজারের পল্লী চিকিৎসকের কাছে ঔষধ খাওয়ানোর পরও জ¦ও কমছে না। শিবনগর ইউনিয়নের পাঠকপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনদিন ধরে তিনি সর্দি, জ্বর ও কাশিতে ভুগছেন। এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসের দেওয়া ওষুধ সেবন করছেন।
পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কলেজ শিক্ষার্থী পাওলিনা হেম্ব্রম বলেন, হঠাৎ করে গত দুইদিন থেকে সর্দি, জ্বরের সাথে কাশি ও গলা ব্যাথা শুরু হয়েছে। ল²ীপুর বাজার থেকে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ খাচ্ছেন। আলাদিপুর ইউনিয়নে গোকুল গ্রামের গৃহবধূ কনিকা রানী বলেন, তার পাঁচ বছরের শিশু সন্তান এক সপ্তাহ ধরে জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওষুধ এনে খাওয়াচ্ছেন। এখন একটু সুস্থ হওয়ার দিকে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক বলেন, এক ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণে লোকজন জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে জ্বর, সর্দি ও কাশি বেশি দিন স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি মৌসুমি ফলমূল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া তিনি মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি।
ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চকচকা, কাঁটাবাড়ী, গৌরীপাড়া, বারোকোনা, সুজাপুর গ্রামের বেশির বাড়ীতেই কেউ না কেউ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত। আক্রান্তদের অধিকাংশই পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। কেউ কেউ আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অথবা চিকিৎসকদের চেম্বারে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলার মাদিলাহাট এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সর্দি, জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী অর্ধশত রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকছেন। যেগুলো জটিল মনে করছেন, তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে রোগীর দীর্ঘ লাইন। হিমশিম খাচ্ছেন বহিঃ বিভাগের চিকিৎসা প্রদানকারি চিকিৎসক উপসহকারি মেডিকেল অফিসারগণ। আন্তঃবিভাগে শয্যা খালি নেই, রোগীতে ভর্তি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলার কিছু অংশের মানুষ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে অন্তত অর্ধেকই সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত। তবে সাধারণ ওষুধে তিন-চার দিনে তারা সুস্থ হয়ে উঠছেন।