ডার্ক মোড
Tuesday, 11 March 2025
ePaper   
Logo
জামালপুর আদালতে আইনজীবি-বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষে আহত ১১

জামালপুর আদালতে আইনজীবি-বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষে আহত ১১

জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে আইনজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছা্ত্র-জনতার মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা-সংঘর্ষে কমপক্ষে ১১২ জনের আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে জামালপুর জেলা জজ আদালতে ঘটনাটি ঘটে।

একটি ধর্ষণ মামলায় একজন আইনজীবি আসামীকে নির্দোষ প্রমাণ এবং মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টায় আদালতকে প্রভাবিত করতে জন্ম সনদ জালিয়াতির প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের রূপ নেয়। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা এবং আইনজীবিরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মুখপাত্র মাহমুদুল হাসান বিবেক জানিয়েছেন, বহুল আলোচিত এক প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবিরা আদালতকে প্রভাবিত করতে জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতির আশ্রয় নেন। এ খবরে আদালত চত্বরে ছাত্রসহ উৎসুক জনতা জমায়েত হতে থাকে। বিজ্ঞ আদালতে শুনানি শেষে আসামী পক্ষের আইনজীবি নজরুল ইসলাম তরফদারের কাছে জালিয়াতির আশ্রয়ের বিষয়ে কথা বলতে গেলে, উক্ত আইনজীবি দুর্ব্যবহার করেন। তর্কবিতের্কের একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আইনজীবি এবং আইনজীবির সহকারিরা সম্মিলিতভাবে আমাদের উপর আক্রমন করলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়।

আমরা মনে করি আইন পেশাটি অনেক মহৎ। এটিকে সাইনবোর্ড বানিয়ে আদালতে বিচার প্রার্থীদের বিড়ম্বনার শিকারের পাশাপাশি বাদি-বিবাদীকে নি:স্ব করে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই আইনজীবিদের এখন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। আমরা এটা থেকে মুক্তি চাই। সিসি ফুটেজ দেখে হামলাকারিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে দুস্কৃতিকারি আইনজবিদের সনদ বাতিলের দাবি করছি।

অপরদিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল আওয়াল ছাত্রদের সাথে কথা বলেতে গেলে তারাও আইনজীবীদের উপর চড়াও হয় এবং হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান (৮০), অ্যাডভোকেট আব্দুল আওয়াল (৫৫), অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক (৪৭), অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম তরফদার (৫৫), আইনজীবী সহকারী রুকনুজ্জামান (৪০), শিক্ষার্থী দয়াময়ী এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে ইমন (২০) ও ইশান (১৫), সদর উপজেলার ইটাইল এলাকার মোজাম্মেলের ছেলে মোয়াজ (১৯), হাসিল বটতলা এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে তারেক (২৩), পৌর শহরের মুসলিমাবাদ এলাকার শাহজাদার ছেলে শিশির (১৮), ইসলামপুর উপজেলার হৃদয় (২৩) আহত হয়। আহতদের মধ্যে এড. খলিলুর রহমান জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোয়াজ, হৃদয়, তারেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি মোয়াজ জুলাই বিপ্লবে পুলিশের গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হয়েছিলে। শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ইমন ও ইশান নামে সহোদর দুই ভাইকে আটক করে তালাবদ্ধ করে রাখেন আইনজীবীরা। পরে পুলিশ তাদের নিরাপদে আদালত থেকে বের করে নিয়ে যায়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রিশাদ রেজওয়ান বাবু বলেন, আদালত চলাকালীন সময়ে কিছু দুষ্কৃতিকারী লাঠিসোটা নিয়ে প্রবেশ করে আইনজীবীদের হুমকি দেয়। তারা এ সময় আইনজীবীদের উপর হামলা চালিয়ে চার জন আইনজীবীকে আহত করে। জেলা আইনজীবী সমিতির কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন