
আজ দিনাজপুরের ফুলবাড়ী আঁখিরা গণহত্যা দিবস রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবি এলাকাবাসীর
আনোয়ার সাদাত, ফুলবাড়ী(দিনাজপুর ) প্রতিনিধি
আজ ১৭ই এপ্রিল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী আঁখিরা গণহত্যা দিবস। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে ১৯৭১ সালের আজকের এই
দিনে উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বারাইহাট থেকে ২০০ গজ দক্ষিণে আঁখিরা নামক পুকুরপারে পাকিস্থানি সেনাদের হাতে
প্রাণ হারায় ভারতে আশ্রয় নিতে যাওয়া ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ,পার্বতীপুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার ৫০টি পরিবারের প্রায় দেড়শর অধিক নারী—পুরুষ ও শিশু। তাদেরকে ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সেই স্থানে নিয়ে আসে পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর উপজেলার (বর্তমান ফুলবাড়ী) রামচন্দ্রপুর গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার কেনান সরকার। কিন্তু কেনান সরকার ঐ পরিবারগুলোকে ভারতে পৌঁছে না দিয়ে টাকা পয়সা, সোনা—গহনা লুট করে তুলে দেন ফুলবাড়ীতে অবস্থানরত খানসেনাদের হাতে। সকাল ১১টায় সকলকে পুকুর পাড়ে লাইন ধরে দাড়িয়ে রেখে স্টেনগানের ব্রাশ ফায়ারে গুলি করে পাখির মতো হত্যা করে।এ সময় দু’একজন শিশু—কিশোর প্রাণে বেঁচে গেলেও পরে তাদেরকে বেয়েনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। অবশ্য দেশ স্বাধীনের পর রাজাকার কেনান সরকারকে মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করে প্রতিশোধ নেন। দেশ স্বাধীনের পর থেকে আঁখিরা বধ্যভূমিটি সংরক্ষণসহ সেখানে বীর ঐসব শহীদদের স্মৃতি উদ্দেশ্যে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেটি ২০২৪ সালে সরকারি নির্মিত হয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এছার উদ্দিন ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অম্বরিশ রায় চৌধুরি বলেন, ‘ফুলবাড়ীর যে কয়টি বধ্যভূমি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় বারাই বধ্যভূমি। আর যে
কজন রাজাকার ছিল তাদের মধ্যে কেনান সরকার অন্যতম। সে শুধু ওই ৫০০ মানুষের প্রাণই নেয়নি, তার হাতে নিহত
হয়েছে ফুলবাড়ীসহ কয়েকটি উপজেলার কয়েক হাজার নিরীহ মানুষ। এ জন্য দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তাঁর
মৃত্যু হয়েছে।’ তিনি আঁখিরা ঐতিহাসিক বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় সন্তষ্টি প্রকাশ করেন।তার সাথে এই দিবসটি রাষ্টি্ধসঢ়;্রয়ভাবে পালনের জন্য জোর দাবি জানান।ইউপি সদস্য ফয়জার রহমানসহ, বাবলু রায়, নন্দ,আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দীর্ঘ ৫৪ বছর পর আখিরা বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ শেষ হলেও এই দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের জোর দাবি আমাদের এলাকাবাসীর।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলি জানান, আমাদের কাছে এখনো রাষ্ট্রীয় ভাবে দিবসটি পালনের কোন নির্দেশনা আসেনি। আসলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।