
বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সপ্তাহ ব্যাপী মারমা স¤প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব
সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান, :
পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে উৎসব মূখর পরিবেশে পালিত হয়েছে মারমা স¤প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই। সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষ দিনে উৎসব দেখতে ভীর জমিয়েছে হাজার হাজার পাহাড়ী—বাঙ্গালী। শুধু তাই নয়,
এই ঝমকালো এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকরাও ছুটে এসেছে পাহাড়ী জেলা বান্দরবানে। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আদিকাল থেকে ঐহিত্যবাহী নানা উৎসব পালন করে থাকে বান্দরবানের মারমাসহ পাহাড়ী জনগোষ্ঠী স¤প্রদায়গুলো। গেল ১৩ এপ্রিল মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা করলেও ১৪ এপ্রিল শহরের উজানী পাড়াস্থ সাঙ্গু নদীর চরে ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধমূর্তি স্নানের মাধ্যমে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় মারমাদের। এরপর থেকে বৌদ্ধ জাদিগুলোতে চলে পূজা অর্চনা, ছোয়াইং দান, হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বিশেষ প্রার্থনাসহ নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। ১৫ এপ্রিল রাজার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা, তৈলাক্ত বাঁশ আরোহণ, যুবতীদের অংশগ্রহণে দড়ি টানা, বালিশ খেলাসহ নানা লোকজ সাংস্কৃতিক ক্রীড়া। আজ শুক্রবার (১৮এপ্রিল) বিকালে সাংগ্রাই এর শেষ দিনে রাজার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জলকেলি ও সাংস্কৃতিক উৎসব। এসময় বিগত বছরের পাপাচার ও গ্লানি ধুয়ে মুছে নিতে মারমা তরুণ—তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটানোর উৎসব জলকেলিতে মেতে উঠে। পাশাপাশি চলে মারমাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৃত্য ও পালা গান।এসব ঐহিত্যবাহী অনুষ্ঠানমালা দেখতে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ইউরিপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল চাকমা, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাউছার, বান্দরবান সেনা জোনের জোন কমান্ডার এসএম মাহমুদুল হাসানসহ হাজার হাজার পাহাড়ি—বাঙ্গালী নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয় রাজার মাঠে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ী—বাঙ্গালী, দেশ ও দেশের বাহিরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের অংশগ্রহণে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান।
এবারের মারমাদের সপ্তাহ ব্যাপী বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ছিলো সমবেত প্রার্থনা, ৩দিনব্যাপী জলকেলি, পিঠা তৈরি, বৌদ্ধ মূর্তি স্নান, হাজারো প্রদীপ প্রজ্জলন, বয়স্ক পূজা এবং আদি ঐতিহ্যবাসী নৃত্য—গান নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সাংগ্রাই মেলা।