ডার্ক মোড
Monday, 20 May 2024
ePaper   
Logo
সাতক্ষীরায় দুই মাসে ২২১৭ শিশু নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত

সাতক্ষীরায় দুই মাসে ২২১৭ শিশু নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত

কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় গত দুই মাসে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ২২৭টি শিশু। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ সময় সদর হাসপাতালসহ জেলার সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭১৭টি শিশু ভর্তি হয়। এছাড়া নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় অন্তত ৫০০টি শিশু। এর বাইরেও প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুরা।

কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, শীতে শিশুদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। প্রতিদিন জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোয় আক্রান্ত শিশুর ভিড় বাড়ছে।

এদিকে জেলার সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে মাত্র একজন শিশু বিশেষজ্ঞ থাকায় আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরের গৃহবধূ হাসি খাতুন জানান, তার আট মাস বয়সের শিশু আরিয়ান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জানুয়ারি থেকে সদর হাসপাতালে ভর্তি। শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি থেমে থেমে জ্বর আসছে। এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার পরও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।

কলারোয়ার মুরারিকাটি গ্রামের কলেজছাত্রী সাদিয়া জানান, তার বোন নাদিয়া নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে ৯ জানুয়ারি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার শ্বাসকষ্ট ও জ্বর। ডাক্তার যে ওষুধ লিখছেন তার কিছু হাসপাতাল থেকে দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র তিন শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ২২-২৫টি শিশু। শয্যার তুলনায় অতিরিক্ত রোগী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নার্সরা। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এসব শিশুর অধিকাংশ হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে।

ডায়রিয়া বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তির পাশাপাশি শিশুরা হাসপাতালের বহির্বিভাগেও চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ঠাÐাজনিত আক্রান্ত শিশুরা হাসপাতালে আসছে। একজন শিশুবিষেশজ্ঞ চিকিৎসকের পক্ষে এত রোগী সামলানো সম্ভব হচ্ছে না।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেয়া। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকট তীব্র। সদর হাসপাতাল ছাড়াও জেলার ছয়টি উপেজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো শিশু বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক নেই। যে কারণে সদর হাসপাতালেই বেশি চাপ থাকে।’

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. সুফিয়ান রুস্তম বলেন, ঠাÐাজনিত কারণে শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে শিশুদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের শীতে বেশি বাইরে না নিয়ে আসা ও তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও যেন খেয়াল রাখেন মা-বাবা।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন