ডার্ক মোড
Friday, 10 May 2024
ePaper   
Logo
শরীয়তপুরে আগুনে পুড়ে ছাই বসত ঘর, মাথা গোঁজার ঠাই নেই পরিবারের

শরীয়তপুরে আগুনে পুড়ে ছাই বসত ঘর, মাথা গোঁজার ঠাই নেই পরিবারের

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

রান্না ঘর থেকে অসর্তকতাবশত আগুন লেগে একই বাড়ির ৪ টি বসত ঘর পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। মসজিদের মাইক দিয়ে ডেকে এলাকাবাসীকে নিয়েও দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি আগুন। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দূরে হওয়ার কারণে এক ঘন্টা সময় ধরে জলতে থাকে আগুন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ একই বাড়ির গরীব ৪ টি পরিবারের সদস্যদের চলমান তীব্র গরমের মধ্যেও মাথা গোঁজার ঠাইটুকুও আর অবশিষ্ট নেই।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২ টার দিকে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানাধীন হযরত আলী মুন্সি কান্দি গ্রামের জহিরুল ইসলাম মোল্লা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বেলা ১২ টার দিকে জাহাঙ্গীর মোল্লার স্ত্রী আমিরন বেগম রান্না ঘরে রান্না করতেছিল। এসময় অসর্তকতা বসত হঠাৎ করেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারদিকে। আগুন লাগার এমন খবর ভেদরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে জানিয়ে দূরত্ব হওয়ার কারণে সখিপুর বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীর সাহায্য চাওয়া হয়।

এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকাকালীন সময় ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু ততক্ষণে জহিরুল ইসলাম ওরফে জোক্কা মোল্লার ১ টি, উজ্জল মোল্লার ১ টি ও জাহাঙ্গীর মোল্লার ২ টি বসত ঘর আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রত্যন্ত এই গ্রামটির ক্ষতিগ্রস্থ এসব বসত ঘরের প্রত্যেকটিতে গৃহস্থ্যের বিভিন্ন খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ছিল। ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে অটোরিকশা ড্রাইভার জাহাঙ্গীর মোল্লা খুবই গরীব। নতুন করে ঘর তোলার মতো সাধ্য নেই তার। তীব্র এই গরমের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাই নেই এখন আর।

আব্দুর রহমান রাসেল নামে স্থানীয় একজন বলেন, বাজার থেকে মাইক দিয়ে মাইকিং করার পর এলাকাবাসী গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করার সময় ফায়ার সার্ভিস এসেছে। রান্না ঘর থেকে লাগা আগুনে মোল্লা বাড়ির ৪ টি বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তীব্র এই গরমের মধ্যে পরিবারগুলোর এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে উজ্জল মোল্লা সখিপুর বাজারে কাচামালের ব্যবসা করলেও জাহাঙ্গীর মোল্লা অটোরিকশা চালিয়ে উপার্জন করে। সরকার থেকে যদি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে সাহায্য করা হয়, তাহলে তারা ভালোভাবে থাকতে পারবেন।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ জাহাঙ্গীর মোল্লা বলেন, অটোরিকশা চালিয়ে উপার্জন করি আমি ও আমার ছেলে নাসির মোল্লা। এছাড়া অন্য কোনো ভাবে উপার্জন করার সাধ্য নেই আমাদের। আমার ও ছেলের ঘর দুইটি পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। সরকার যদি আমাদেরকে ঘর তুলতে সাহায্য করত, তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে পারতাম। অন্যথায় তীব্র এই গরমের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচেই থাকতে হবে আমাদের।

ভেদরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিবিল ডিফেন্সের ফায়ার ফাইটার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে রওনা করে। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে পৌনে ২ ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনে সর্বমোট প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন