ডার্ক মোড
Tuesday, 07 May 2024
ePaper   
Logo
লামায় শিক্ষাক্ষেত্রে ৫১ দৃষ্টিনন্দন ভবন: স্কুল নয় যেন স্বপ্নের বাড়ি

লামায় শিক্ষাক্ষেত্রে ৫১ দৃষ্টিনন্দন ভবন: স্কুল নয় যেন স্বপ্নের বাড়ি

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বর্তমান সরকারের আমলে গত ১০ বছরে শিক্ষার পরিবেশে আমুল পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক ক্লাসরুম, অন্যান্য ভৌত অবকাঠামোসহ নান্দনিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা,সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি,বিদ্যালয়ে ভর্তির হার শতভাগ,ছাত্রছাত্রীর সমতা, নারী শিক্ষায় অগ্রগতি,ঝরে পড়া হ্রাসে মনোরম পরিবেশে পাঠদান এসব ভবন নির্মাণের মূল লক্ষ্য।

লামায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধানে প্রাথমিকে ৪৫টি,মাধ্যমিকে ৫টি,উচ্চ মাধ্যমিকে ১টিসহ ৫১টি দৃষ্টিনন্দন আধুনিক মানের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা ফাউন্ডেশন ভবনের দ্বিতল হচ্ছে প্রাথমিকে।২০০৯ সালের পর থেকে বিভিন্ন অর্থ বছর ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ৮টি,চাহিদা ভিত্তিক নতুন জাতীয়করণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পে ৮টি,চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী প্রকল্পে ১৭টি,বিদ্যালয় বিহীন এলাকায় ১৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পে ৬টিসহ মোট ৪৫টি ভবন নির্মাণের কাছ চলছে।এরমধ্যে ২৮টি ভবন নির্মাণশেষে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।বাকি ১৭টি ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।কিছু দিনের মধ্যে এগুলোও হস্তান্তর করা হবে।

ভবনগুলিতে রয়েছে বিদ্যুতায়ন,নিরাপদ পানির ব্যবস্থা,স্যানিটেশন,চিলড্রেন্স প্লেকর্নার,দেয়াল সাজসজ্জা করণসহ নানা উপকরণ।এছাড়া বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় প্রতি স্কুলে ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ২১টি স্কুলে সোলারের সাহায্যে নিরাপদ পানিসহ বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থা।

প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিকে শিশুদের জন্য রয়েছে খেলনা সা¤্রগ্রীসহ অত্যাধুনিক শ্রেণিকক্ষ।এসব শ্রেণিকক্ষে শিশুরা খেলাধুলার সাথে মনের আনন্দে পড়া লেখা শিখছে। বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে উৎসাহ উদ্দিপনায় শিশুরা স্কুলে চলে আসছে প্রতিদিন।এরফলে উপস্থিতির হার আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।

লামামুখ,নুনারবিল মডেল,মংপ্রু পাড়া,বাইশ পাড়ি,এম হোসেন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায় বিদ্যালয় নয় যেন আধুনিকতার ছোঁয়ায় কারো স্বপ্নের বাড়ি।বিদ্যালয়ের ভিতরে বাহিরে পেন্টিং,বিভিন্ন কবি,মনিষীর ছবি, বাণি,স্বরবর্ণ,ব্যঞ্জনবর্ণসহ দেয়ালঙ্কন,উন্নতমানের রঙিন বেঞ্চ সবমিলে এক অপরুপ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।প্রাক প্রাথমিকে শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ আরও বেশি নান্দনিক।এমন সুন্দর মনোমুগ্ধকর পরিবেশে আনন্দসহকারে পড়া ও বিদ্যালয়ে আসার উৎসাহ সৃষ্টি হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।

লামামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার বলেন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগের দিনে জরাজীর্ণ শ্রেনিকক্ষের যে পরিবেশ ছিল তা এখন আর নেই।বর্তমানে যে হারে পরিকল্পনা মাফিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে প্রতিষ্ঠানের জায়গার অপচয় রোধ হচ্ছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মাহফুজুল হক ভবন নির্মাণের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,উন্নত পরিবেশে শিক্ষাদানের বিষয় বিবেচনায় রেখে সরকার আধুনিক ডিজাইনে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করছে ।এরফলে শিশুরা বিদ্যালয়মুখী হবে ও প্রাথমিক শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার চৌধুরী বলেন,্উজেলায় অধিকাংশ বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন।বর্তমানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার আগের চেয়ে বাড়ছে এবং ঝরেপড়া অনেককাংশে কমে আসছে।

অপরদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে লামায় ৬টি ৪তলা বিশিষ্ঠ দৃষ্টিনন্দন আধুনিক মানের ভবনের মধ্যে সরকারি মাতামুহুরী কলেজ,লামামুখ উচ্চ বিদ্যাললয়ের কাজ শেষ।বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,গজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ফাসিয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয় ও ইসলামিয়া ডিগ্রী মাদ্রাসার কাজ প্রায় শেষের দিকে।

শিক্ষানুরাগীরা মনে করেন,সুদীর্ঘকাল থেকে আমাদের দেশে গাছের তলে,খোলা আকাশের নিচে,ভাঙা বেড়া,খড়,টিনের ঘরে জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে চলে আসছে পাঠদান।বিদ্যুৎ,সুপীয় পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছিলনা অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।এখন দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণের ফলে আগেরমত পরিবেশে পাঠদানের দিন শেষ হয়।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন