ডার্ক মোড
Tuesday, 14 January 2025
ePaper   
Logo
লাকসাম জুড়ে মাংসের নামে কি খাচ্ছি জনমনে তোলপাড়

লাকসাম জুড়ে মাংসের নামে কি খাচ্ছি জনমনে তোলপাড়

কুমিল্লা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি

এ অঞ্চলের হাটবাজার জুড়ে যখন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্থির বাজার মূল্য ঠিক এমন সময় কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার সর্বত্র গরু, মহিষ, খাসি, হাস, পশু-পাখি ও মোরগের ভেজাল মাংস খাওয়ার নামে আমরা কি খাচ্ছি? এ নিয়ে এ অঞ্চলের জনমনে নানাহ বির্তক ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলের সংশ্লিস্ট স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনক কারনে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করায় তাদের দায়িত্ব নিয়ে নানান কথা উঠেছে। ফলে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে ওইসব মাংস ব্যবসায়ীদের একটি চক্র। উপজেলা ও পৌরসভা সেনেটারী ইন্সপেক্টার রহস্যজনক কারণে এ ব্যাপারে নীরব দর্শক।

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলা গুলোর স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের একাধিক চিহ্নিত মাংস ব্যবসায়ী মৃত-অসুস্থ্য পশু, ট্রেনে কাটা কিংবা সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত পশু, গর্ভবতী-চোরাইপশু, ভারতীয় প্যাকেটজাত এবং নানাহ রোগাক্রান্তগরু-মোরগসহ নানাহ ধরনের পশুর মাংস কম দামে ক্রয় করে এ অঞ্চলেহাট-বাজার গুলোতে সরবরাহ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া জেলার চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর, নাঙ্গলকোটের বাঙ্গড্ডা, বরুড়ার বিভিন্নঅঞ্চল, সদরদক্ষিন ও লালমাইয়ের বিভিন্ন এলাকা এবং মনোহরগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলসহ চোরাই পথে আসা ভারতীয় প্যাকেটজাত মাংস স্থাণীয় খাবার দোকান গুলোতে কম দামে সরবরাহ করছেন একাধিক মাংস ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সদস্য। এর সাথে যোগ হচ্ছে চামড়ার মাংস সহ নানাহ ধরনের ভেজাল মাংসতো আছেই।

সূত্রটি আরও জানায়, এ অঞ্চলের হাটবাজার গুলোতেপাইকারী গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৮০/- টাকা খুচরা ৭০০/৭৫০/-টাকা, বিভিন্ন ধরনের ভেজাল গরুর মাংস কেজি ৩০০/৪০০/-টাকা, ভারতীয় প্যাকেটজাত মাংস প্রতি কেজি ৪০০/- টাকা, দীর্ঘদিনের মওজুত ফ্রিজাপ করা গরুরমাংস কেজি ৪৫০/৫০০/- টাকা, চামড়া-ঝুরা মাংস ২০০/২৫০/- টাকায় খাবার দোকানগুলোতে বিক্রি করছেন ওইসব সেন্ডিকেট। এ অঞ্চলের বানিজ্যিক নগরীখ্যাত লাকসাম অঞ্চলে ওইসব অবৈধ ও ভেজাল মাংস বিক্রিতে স্থানীয় একাধিক মাংস ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে।

চোরাইগরু ও ভেজাল মাংস বিক্রির দায়ে একাধিক মাংস ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার, স্থানীয়ভাবে অর্থদন্ড দিলেও ওইসব অবৈধ সেন্ডিকেট মাংস ব্যবসায়ীদের তৎপরতা প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে কখনও কখনও বেটি ছাগল খাসি হয়ে যায় এবং খামারগুলোতে অসুস্থ্য মোরগ ও খাবার দোকান গুলোতে সুস্থ্য মোরগ হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা গুলোর হাট-বাজারে ২/৪ জন ছাড়া কেহই গরু জবাই করেনা। অন্যদের কেউ কেউ তাদের কাছ থেকে পাইকারীতে কিনে স্থানীয় ভাবে খুচরা দামে বিক্রি করছেন। বাকীরা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চোরাই- অসুস্থ্য গরু কিংবা ভেজাল মাংস সরবরাহ করে একই দামে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। এছাড়া মাংস বিক্রিতে পরিমানে কম, হাড়, চর্বিসহ নানাহ প্রতারনা করছেন ক্রেতাদের সাথে।

স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানায়, সকল মাংসই কোনটা আসল আর কোনটা ভেজাল তা নিরুপনকরা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। মাংস কতোটা নিরাপদ সেটা নির্ভর একমাত্র মাংস ব্যবসায়ীদের বিশ^াসের উপর। আবার সকল মাংসই উপকার কিংবা অপকার দুটোই আছে। বিশেষ করে গরুর মাংসে যত পুষ্টিগুন আছে সেগুলো অন্য কোন খাবার থেকে পাওয়া কঠিন। সকল প্রকার মাংসই আপনার জন্য ক্ষতিকর হবেনা কি উপকার হবে সেটা নির্ভর করবে কতটা নিয়ম মেনে এবং কি পরিমাণ খাচ্ছেন। তবে স্থানীয় অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও পুষ্টি বিদগণ সকল মাংস ব্যবহার নিয়ে সর্তকতাসহ নানাহ গবেষনা মূলক তথ্য পৃথক পৃথক ভাবে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। যা মানুষ না মানলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তেই থাকবে।

এ ব্যাপারে সত্যতা নিশ্চিত করে লাকসাম বাজার মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, বাহির থেকে ভেজাল মাংস ও চোরাই কিংবা অসুস্থ্য গরু মাংস বিক্রি এবং সরবরাহ নিয়ে আমরা বেশ কয়েকবার প্রশাসনিক লোকজন সহ পরামর্শ সভা করেছি কিন্তু স্থানীয় গুটি কয়েকজন লোক এ ভেজাল ও অবৈধ মাংস সরবরাহের সাথে জড়িত। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। তবে এ বিষয়ে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন