ডার্ক মোড
Saturday, 12 July 2025
ePaper   
Logo
মুজিবনগর কর্মচারী কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিতর্কিত সাব- রেজিস্টাররা চাকরির মেয়াদ বাড়াতে শতকোটি টাকার মিশন

মুজিবনগর কর্মচারী কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিতর্কিত সাব- রেজিস্টাররা চাকরির মেয়াদ বাড়াতে শতকোটি টাকার মিশন

বিশেষ প্রতিনিধি

মুজিবনগর কর্মচারী কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিতর্কিত সাব রেজিস্টাররা তাদের চাকরির মেয়াদ বাড়াতে শত কোটি টাকার মিশনে নেমেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ প্রাপ্ত এসব সাব -রেজিস্টারদের বয়স এবং জন্ম তারিখ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সাথে অসামঞ্জস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ কোটায় নিয়োগ পাওয়া ১৫ জন সাব- রেজিস্টার ইতিমধ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে আবেদন করে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মিশনে নেমে তাদের চাকরির বয়স এক বছর বাড়ানোর জন্য জোর তদবির করে যাচ্ছেন।

যারা এ কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠজন বলে জানা যায়।

এই মিশনের টেস্ট কেস হিসেবে এই দু'জন সাব- রেজিস্টারের এর ফাইল উপদেষ্টা বরাবর উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরা হলেন ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলা সাব- রেজিস্টার মো : মনজুরুল ইসলাম এবং গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলা সাব- রেজিস্টার ওসমান গনি মন্ডল ।

এই প্রতিবেদকের হাতে আসা চাকরির বয়স বাড়ানোর প্রস্তাবিত ফাইলের নোটে দেখা যায়, মুজিবনগর কর্মচারী ( মুক্তিযোদ্ধা) কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত সাব- রেজিস্টারদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর স্বপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে । ইতিমধ্যে তাদের ফাইল উপদেষ্টা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয়ে মতামতের জন্য সলিসিটর বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখান থেকে পজেটিভ মতামত আনার জন্য বিশেষ বরাদ্দ রয়েছে এবং একটি চক্র এ ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছে।

উল্লেখ্য, মুজিবনগর কর্মচারী (মুক্তিযোদ্ধা) কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত এসব সাব -রেজিস্টারদের বিরুদ্ধে বয়স জালিয়াতি, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মুজিবনগর কর্মচারী সাজা, জমির মূল্য কম দেখিয়ে সরকারকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা, জাল দলিল রেজিস্ট্রি করা, পরিত্যক্ত, খাস ও বন বিভাগের জমি রেজিস্ট্রি করাসহ ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে কিন্তু রহস্যজনককারণে ফাইলের নোটে এসব অভিযোগের বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং গোপন রাখা হয়।

আলোচিত এসব মুজিবনগর এর সাব- রেজিস্ট্রাররা ফ্যাসিস্ট সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল কারণ যখন মুজিবনগর কর্মচারীদের চাকরিতে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা যখন সুপ্রিম কোর্টে চলছিল তখন এই মামলায় এডভোকেট-অন- রেকর্ড ছিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন আইনজীবী আনিসুল হক। ওই সময় থেকেই তাদের ঘনিষ্ঠতা শুরু হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন বদলি ও সুযোগ -সুবিধায় তারা প্রাধান্য পেত। এখন তারা বর্তমান আইন উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

বিতর্কিত সাব -রেজিস্টারদের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির এ ঘটনায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে । সোসাইটি ফর ইনফোর্সমেন্ট অব বেসিক রাইটস (এস ই বি আর) নামে একটি মানবাধিকার সংস্থা এ বিষয় বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে আইন উপদেষ্টা এবং সচিব বরাবর আবেদন অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখিত সাব- রেজিস্টার ছাড়া মুজিবনগর কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত অন্যান্য সাব- রেজিস্টারদের মধ্যে রয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর উপজেলা সাব রেজিস্টার আবুল হোসেন ( অবসরে যাওয়ার সময় ১০/১১/২০২৫), ফরিদপুর সদর সাব -রেজিস্টার মিনতি দাস ( অবসরে যাওয়ার সময় -১৩/৩/২৬), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলা সাব -রেজিস্টার আবু তাহের মোস্তফা কামাল (অবসরে যাওয়ার সময় ২৯ /৮/২০২৫), চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলা সাব -রেজিস্টার ওবায়েদ উল্লাহ (অবসরে যাওয়ার সময় -৩১/ ১২ /২৫), লক্ষ্মীপুর সাব-রেজিস্টার আবুল বাশার (অবসরে যাওয়ার সময় ৩০/১২ /২০২৫), বাগেরহাটের মংলা উপজেলা সাব -রেজিস্টার স্বপন কুমার (অবসরে যাওয়ার সময় ১৮/৮/২০২৫), পটুয়াখালী সদর সাব -রেজিস্টার মোঃ ফারুক পাটোয়ারী ( অবসরে যাওয়ার সময় ২১ /৫/২৭) এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়া সাব- রেজিস্টার কাজী নজরুল ইসলাম (অবসরে যাওয়ার সময় ২/৪/২০২৬), নীলফামারী জেলার লুৎফুর রহমান এবং ভোলার রফিকুল ইসলাম।

একটি সুত্র জানায়, এইসব সাব- রেজিস্ট্রাররা অত্যন্ত সুকৌশলে আত্মীকরণ হয়। একশ্রেণীর দালাল চক্রের নিকট হতে সার্টিফিকেট কিনে তারা মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী বনে গেছেন।

এদেশের তরুণ মেধাবী ছেলেরা যখন চাকরি পাচ্ছেন না তখন এদের মত টাউটশ্রেনির লোক মহান মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে কোন মতামত পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন