
দূর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গনি : চাকরির মেয়াদ বাড়াতে কোটি কোটি টাকা নিয়ে ধর্না স্ত্রী আজিজা সুলতানাও কোটি কোটি টাকার মালিক
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
মাত্র ৫ বছর বয়সে মুজিব নগরের সনদে মুক্তিযোদ্ধা হন ওসমান গনি মন্ডলের সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকুরীর মেয়াদ চলতি জুলাইয়ে শেষ হবে।
ফলে চুক্তি ভিত্তিক চাকরীর মেয়াদ বাড়াতে তিনি প্রায় ৫০ কোটি টাকা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং মহা পরিচালকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
দূর্নীতিবাজ এই সাব রেজিস্ট্রার ২০০৯ সালে মুজিব নগর সনদে চাকুরিতে যোগদান করেন।
তিমি মাত্র ৫ বছর বয়সে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেন।
আর ৪৪ বছর বয়সে চাকরীতে যোগদান করে মাত্র ১৫ বছর চাকুরি করে প্রায় ৩'শ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ তার স্ত্রী, মেয়ে সহ নামে বেনামে দেশ-বিদেশে বিনিয়োগ করেছেন।
চলতি ৩ জুলাই তাকে নিয়ে জাতীয় দৈনিক মুক্তখবর পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। আর খবর প্রকাশের পর চাকরীর শাস্তি থেকে বাঁচতে সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গনিরও দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। পাশাপাশি প্রকাশিত খবরটি ধামাচাপা এবং চাকরীর চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ বাড়াতেও তিনি সরকারের বেশ কিছু আমলার সাহায্য নিচ্ছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
অঢেল সম্পদের মালিক সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গনি রংপুর, কুড়িগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আলীশান বাড়ী নির্মাণ সহ বিদেশেও বাড়ী নির্মাণ এবং কোটি কোটি টাকা ব্যাংকে রেখেছেন এমন তথ্য তার একাধিক সহকর্মী মৌখিকভাবে দিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় চাকুরী করছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে দূদক (দূর্নীতি দমন কমিশন) কুড়িগ্রামের মাহবুবুর রহমান স্বপন নামে এক ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সাব রেজিষ্ট্রার ওসমান গনি চাকুরী জীবনে আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে যা ইচ্ছে, তাই করেছেন। রংপুর শহরের কেরানীপাড়ায় স্বপ্নচুড়া স্কুলের উত্তর পাশে ৮ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন, কুড়িগ্রামে ডুপ্লেক্স মডেলের ২য় তলা একটি বাড়ীও করেছেন। রংপুরের ভবনটিতে বেশকিছু সিসি ক্যামেরা লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু বাড়ীটিতে নেমপ্লেট কিংবা সিটি কর্পোরেশনের থেকে দেয়া বাড়ীর নম্বর নেই। তার স্ত্রী মোসাম্মৎ আজিজা সুলতানা বেগমের নামেও অবৈধ সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে। রাজধানী ঢাকার উত্তরার ১২নং সেক্টরের ১৩নং রোডে ৫ কাঠা জমিতে ৭ তলা বাড়ী নির্মাণ করেছেন। দুদক খতিয়ে দেখলে তার অঢেল সম্পদের খোঁজ মিলতে পারে বলে একাধিক সুত্র জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদক, আইন সচিব, আই.জি.আর সহ অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ থাকলেও অভিযোগগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। ওসমান গনির কারণে কোটি টাকার ক্ষতির শিকার কুড়িগ্রামের মাহবুবুর রহমান স্বপন নামের এক ব্যক্তি দূর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ঘুষের অভিযোগ করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালের ২৪ জুলাই কুড়িগ্রামের রৌমারি উপজেলায় জন্ম নেন ওসমান গনি। মাত্র ৫ বছর বয়সেই তিনি মুজিবনগরের কর্মচারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে ২০০৯ সালের ৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করেন। এরপর তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, নাটোরের গুরুদাসপুর, কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর, চট্রগ্রামের বাঁশখালী, নরসিংদীর মনোহরদী, বগুড়া সদর, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে চাকরী করেছেন।