নির্বাচনের মধ্যেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সমস্যার সমাধান-তাই দ্রুত নির্বাচন দিন: এ্যাড.ফজলুর রহমান
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় উৎসবে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এ্যাড ফজলুর রহমান বলেন, কই আছেন হামিদ সাব। ছেলেরা কই? আমি রাজনীতি শিখেছি বলেই আবদুল হামিদের কিছুটা অস্তিত্ব আছে। না হলে তাঁর সমস্ত বাড়িঘর পুইড়া ছারখার হইয়া যাইত।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর জেলায় জেলায় বিজয় উৎসব হতো। অনেকে বলেন বিজয়ের মা নাকি আইসিইউতে গেছে। এটাতো আমি সহ্য করি না, মুক্তিযোদ্ধারা সহ্য করে না। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা সহ্য করে না। জিয়াউর রহমানের যারা সৈনিক তাঁরা সহ্য করে না। কারণ জিয়াউর রহমান এই দেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।
গত মঙ্গলবার রাতে কিশোরগঞ্জের ইটনা সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ৫৪ তম বিজয় উৎসব উপলক্ষে জনসমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে দেশের সর্বনাশ করেছে। তাঁর বাপকে ডুবিয়েছে। দেশকে ডুবিয়েছে। শেষ পর্যন্ত দেশ থেকে পালিয়ে গেছে । ১৫ বছর এ দেশে কোনো মানুষের শাসন ছিল না। ফ্যাসিস্ট শাসন ছিল। ইতিহাস আমাকে বলত তুমি হাসিনাকে জানাইয়া দাও দিন আসছে যেদিন কিশোরগঞ্জের বাসাবাড়ির সব গেইটে লিখা থাকবে এই বাড়িতে কোনো আওয়ামী লীগ বসবাস করে না।
ফ্যাসিষ্ট আ'লীগের সাবেক চার মন্ত্রীকে সরকারের কাঠামো থেকে সরাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে দাবি করে ফজলুর রহমান বলেন, তিনি বলেন, হাসিনাকে বলেছিলাম ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক আর শিক্ষামন্ত্রী নওফেলকে লাথি দিয়া মন্ত্রিসভা থেকে বের কইরা মানুষের কাছে হাত জোর কইরা দাঁড়ান। মাফ চান। বাঙালির মন অত্যন্ত নরম। ইচ্ছা করলে আপনাকে মাফ করতে পারে। হাসিনা যদি মাথা নিচু করে মাফ না চায় জীবনে কোনো দিন মাফ পাবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের (বিএনপি) মহাসচিব প্রতিদিন বলেন ‘দ্রুত নির্বাচন দেন। যত দেরি করবেন নির্বাচন দিতে দেশ ততই জটিলতার দিকে যাবে। আমাদের প্রধান নেতা তারেক রহমান প্রতি দিন বলেন নির্বাচন দেন। নির্বাচনের মধ্যেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সমস্যার সমাধান। আপনারা কর্ণপাত করেন না। আমি বিজয় সমাবেশ থেকে বলছি আমার নেতা তারেক রহমান ও মহাসচিবের দাবির মতো আমিও চাই দ্রুত নির্বাচন দিন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, আজকে দেশে নতুন সরকার এসেছে। নতুন সরকার কারা। ওই আবু সাইদ। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। যে হাত উঁচু করে বলছিল ‘কর গুলি’। বুক দিয়া গুলি লেগেছে পিঠ দিয়া বের হইছে দৌড় দেয় নাই। আমি বলেছিলাম প্রথম এই আবু সাঈদ হলো একবিংশ শতাব্দীর প্রথম বীরশ্রেষ্ঠ।
ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপনের সঞ্চালনায় জনসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাইল মিয়া, আমিনুল ইসলাম আশফাক।
জনসমাবেশ ও বিজয় উৎসবে যোগ দিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে জড়ো হন। এর আগে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার ৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সমাবেশ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সালমা, আশিক ও শাহনাজ বাবুসহ স্থানীয় শিল্পীরা।
এদিকে বিজয় উৎসবকে ঘিরে হাওরের তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা গুলোর জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। হাওর এলাকার অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষের পদচারণায় উৎসব প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে।