ডার্ক মোড
Thursday, 23 January 2025
ePaper   
Logo
দোহারে বিএনপি নেতা হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি ১২ বছরে

দোহারে বিএনপি নেতা হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি ১২ বছরে

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার দোহার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ বেপারী(৬৫)কে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছিল সন্ত্রাসীরা। রশিদ বেপারী সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিলেন এবং তিনি পাচঁ বার ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারী বাদ আছর উপজেলার নিকড়া জামে মসজিদ থেকে নামাজ আদায় শেষে বের হউন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ বেপারী।এ সময়ে সড়কে উৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা আব্দুর রশিদ বেপারীর মুখে ও মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা নিশ্চিত করে মটর সাইকেলযোগে দ্রæত পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ বেপারী।

২২ জানুয়ারী বুধবার বিকেলে নিহত আব্দুর রশিদ বেপারীর বড় ছেলে ও হত্যা মামলার বাদী মো.জাহাঙ্গীর বেপারী অভিযোগ করে বলেন, হত্যার ঘটনার ১২ বছর অতিবাহিত হলেও আওয়ামী রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে এখনও মামলার বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন।তিনি আরও বলেন, বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের স্বরাষ্ট উপদেষ্ঠা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, গত ১৬ বছরের যত গুম, হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার সব বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবেন। আমার বাবাকে হত্যার মামলায় সম্পূরক চার্জশিট সংশোধন করে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে পুনরায় চার্জশিট প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ও অর্থদাতাদের চার্জশিটে সংযুক্ত করে বিচারিক কাঠগড়ায় দাড় করানোর জোর দাবী করছি।

এ সময়ে নিহত পরিবারের স্বজনরা আরও অভিযোগ করে বলেন, দোহার থানায় হত্যা মামলার নাম্বার ১০/১/২০১৩। সে সময়ে আওয়ামী লীগের সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খানের হস্তক্ষেপ ছিল মামলার তদন্তে। ফলে দোহার থানা পুলিশ মামলার তদন্ত কাজ সম্প‚র্ণ না করে ডিবিতে স্থানান্তর করেন।পরবর্তীতে ডিবি থেকে আদালতের নির্দেশে সর্বশেষ সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানেও সেই প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের কারনে তদন্ত রিপোর্টে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত অনেকের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের সহযোগীতা না পাওয়ায় এখনো আমরা সঠিক বিচার পাইনি।

নিহত আব্দুর রশিদ বেপারীর ভাতিজা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বেপারী বলেন, ২০১৫ সালে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নয়নকে গ্রেফতার করেছিল তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে সময় আটক আসামী নয়ন স্বীকার করেছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের ছোটভাই মোতালেব খানের হুকুমে ৫জন সহযোগী নিয়ে তিনটি মটর সাইকেলযোগে আমার চাচাকে গুলি করে হত্যা করেছে। পরবর্তীতে আসামী নয়ন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি পেশ করেন নি। উল্টো জামিনে বেরিয়ে নয়ন এখন পলাতক রয়েছে।

এ বিষয়ে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম জানান, এই মামলায় পুলিশের এখন কিছুুই করার নেই। বাদী পক্ষ আদালতে নারাজি দিলে আদালত কতৃক নির্দেশে পুনঃতদন্তের জন্য আবেদন করতে পারেন। আশাবাদী তারা উপকৃত হবেন।

উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি বাদ আছর দোহার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ বেপারী মসজিদে নামাজ শেষে ফিরছিলেন।পথে এ সময়ে তিনটি মটর সাইকেলযোগে ৬জন দূর্বৃত্ত নেমে এসে তাকে মুখে ও মাথায় গুলি করে দ্রæত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় ওই রাতেই তার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর বেপারী বাদী হয়ে দোহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার চারদিন পর খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করলে দোহার থানা পুলিশ তাতে বাধা দেন এবং দোহার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এ সময়ে পুলিশ মানববন্ধন কারীদের নিকট থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন