ডিসি নিয়োগে লেনদেনের অভিযোগে প্রশাসন ক্যাডারদের প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি জেলা প্রশাসক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তুলে দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে পরিবেশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সংগঠনটির মহাসচিব মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান ও সভাপতি ড. মো. আনোয়ার উল্লাহ যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় জেলা প্রশাসক নিয়োগ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে পদায়নসহ অন্যান্য পদে পদায়ন নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ ও তথ্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএসএ) নজরে এসেছে।
এ ধরনের সংবাদ প্রচারের পূর্বে সব তথ্য সার্বিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে কিংবা ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধান না করেই কোনো কোনো মিডিয়ায় কখনও কখনও অতিউৎসাহিত হয়ে অতিরঞ্জিত সংবাদ ও তথ্য পরিবেশন করে প্রশাসন ক্যাডারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকরণসহ ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের ফসল তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার প্রয়াসে লিপ্ত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, দুর্নীতির সংবাদ সাক্ষ্যপ্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়। এরূপ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মোবাইলের স্ক্রিনশট বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে অডিও রেকর্ড ব্যবহার করা হচ্ছে যা বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কৃত্রিমভাবেও প্রস্তুত করা সম্ভব। ফলে সব মিডিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন স্মরণ করিয়ে দিতে চায় যে, স্বৈরাচার সরকারের দোসররা এখনো সক্রিয় থেকে গোপনে নানা অপকৌশলে তথ্য বিভ্রাট ঘটিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিধায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে ফাঁস হয়েছে এক ভয়াবহ কেলেঙ্কারির তথ্য। এ নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং বিতর্কিত দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের সরাসরি জড়িত থাকার তথ্য সামনে এসেছে। সেই সিনিয়র সচিবের সঙ্গে এক যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনে সম্প্রতি ডিসি নিয়োগ নিয়ে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেনের তথ্যও উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের একপর্যায়ে নিজেকে নির্লোভ দাবি করেন সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। টাকা-পয়সার প্রতি কোনো লোভ নেই জানিয়ে ডিসি নিয়োগে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। তাদের এ সংক্রান্ত কথোপথনের কিছু স্ক্রিনশট রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলেও ঘুরপাক খাচ্ছে, যা নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।