গার্ড-ফরেষ্টার সড়ক চাঁদাবাজ ওদের রুখবে কারা
এ.বি রাজ্জাক, লক্ষ্মীপুর
দেশব্যাপী ফরেষ্ট চেক স্টেশনগুলো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এক শ্রেণীর গার্ড-ফরেষ্টার ও রেঞ্জ অফিসার মোটা অংকের উপঢৌকন দিয়ে বন বিভাগের লোভনীয় চেক স্টেশনগুলোতে বদলী হয়। আর লোভনীয় সব স্টেশনে যোগদান করেই নানা অজুহাতে পণ্য পরিবহনকৃত ট্রাক চেক করার নামে শুরু হয় অহেতুক হয়রানী ও চাঁদাবাজী। তাদের চাহিদা মাফিক টাকা না দিলেই শুরু হয় নানা ফন্দি ফিকিরের হেনস্তা। আর অহেতুক রাস্তার ঝামেলা মিটাতেই টিপি পারমিট থাকার পরও বন বিভাগের চেক স্টেশনগুলোতে বনের লোকদের দিতে হয় হাজার হাজার টাকা। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-ঢাকা রোডের চেক স্টেশনগুলো খুবই বেপরোয়া। লক্ষীপুর-রায়পুর-রামগঞ্জ-চাটখিল আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রতিনিয়ত বন কর্মচারী দিয়ে চেকিং এর নামে যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে খোদ রামগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরারব দাখিলকৃত গনস্বাক্ষরিত এক অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রামগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তার নির্দেশে পদ্মা বাজার এলাকার সামনে বন কর্মচারী সাইফুল ইসলাম প্রতিদিন ২৩ থেকে ২৫টি গাছ বহনকারী ট্রাক ও ট্রলি থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। এ চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে রায়পুর ও রামগঞ্জের করাতকল মালিক ও লাকড়ি ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। রামগঞ্জ উপজেলা রেঞ্জের আওতায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের পাশে সরকারী বন ভ‚মি রয়েছে। তার আশে পাশে রয়েছে প্রায় ৪০/৫০ টি করাতকল ও ১২ জন লাকড়ী ব্যবসায়ী।
অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে লাইসেন্স না করায় গত তিনমাস ধরে হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাকড়ী ব্যবসায়ী মনির ও জসিমের কাজ থেকে ৩ ও ৮ হাজার টাকা আদায় করেন ঐ বন কর্মকর্তা। গত ১ মাস আগে কাটাখালী এলাকার একজন কতারকল মালিকের নিকট থেকে এই বন কর্মকর্তা ২০ হাজার টাকা আদায় করেন। দীঘিরপাড় এলাকার করাতকল মালিক সেলিমের কাছ থেকে আদায় করেন ১০ হাজার টাকা।
বন কর্মকর্তার এ অবৈধ চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জনৈক ট্রাকচালক আঃ রহমান জানান প্রতিদিন ব্যবসায়ীদের গাছ নিয়ে রায়পুর থেকে রামগঞ্জ শহর দিয়ে চাটখিল ও হাজীগঞ্জ যাওয়ার সময় পদ্মা বাজার এলাকায় বন বিভাগের এক কর্মচারীকে ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। টাকা না দিতে চাইলেই মামলার ভয় দেখানো হয়। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে সাইফুল ইসলাম নামের এক ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী যানবাহন থামিয়ে টাকা নিচ্ছেন।
টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের নির্দেশে গত ৩ মাস ধরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়কের পাশে বসে থেকে ৫০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা করে পর্যন্ত চাঁদা তুলছেন তিনি। অবৈধ চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান জানান আমি কোন কর্মচারীকে চাঁদা আদায় করতে বলিনি। গাছ পাচারকারীদের ধরতে সাইফুলকে পাহারায় রেখেছি। এ বিষয়ে লক্ষীপুর জেলা বন কর্মকর্তা শাহীন আলম জানান পদ্মা বাজারের সামনে কোন চেকপোস্ট রয়েছে কিনা তা জানা নেই। রাস্তায় বন কর্মকর্তাদের অবৈধ চাঁদাবাজির বিষয়ে নোয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।