ডার্ক মোড
Tuesday, 21 May 2024
ePaper   
Logo
কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গা স্নান

কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গা স্নান

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া অর্থাৎ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে অক্ষয় পুণ্যলাভের আশায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সমুদ্রস্নান করেছে।

শুক্রবার (১০ মে) ১১টায় আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রম এর অক্ষয় তৃতীয়াব্রতম সনাতন ধর্ম্ম সম্মেলনের আয়োজনে ভোর ৫ টা থেকে আহ্বানী, সমবেত প্রার্থনা, মঙ্গলঘাট স্থাপন, শ্রী শ্রী বিষ্ণ পূজা,গঙ্গা মায়ের পূজা শেষে সকাল ১১ টায় পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়।

তাদের বিশ্বাস, এটি হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি। এই শুভদিনে বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নিয়েছিলেন, এ জন্য এই দিনটি পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবেও পালন করা হয়। বেদব্যাস ও গণেশ এই দিনে মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। এদিনই সত্য যুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়। এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন বলে তাদের বিশ্বাস।

কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথী হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রম এর প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ শ্রী শ্রী জয়দেব ঠাকুর। বিশেষ অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরের সহধর্মিণী জগৎমাতা হরপ্রিয়া দেবী ও পরমপূজ্যপাদ ঋত্বিক মহারাজ ডাঃ রাধাস্বামী।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রমের সভাপতি ও বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. পরিতোষ রায়, ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুর রহমান।

প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে সানাতন ধর্মাবলম্বীরা গঙ্গাস্নানে আসেন। এ সময় হাজারো মানুষের কোলাহলে মুখরিত হয় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এ সময় সৈকতে দেখা যায় অনেকেই স্নান শেষে পরিবার নিয়ে গীতা পাঠ করছেন, আবার কেউ প্রার্থনা সহ ধর্মীয় রীতি-নীতি পালনে মগ্ন রয়েছেন।

বরিশাল থেকে আগত সাগর বিশ্বাস জানান, এই দিন গঙ্গাস্নান করলে অক্ষয় পুণ্য অর্জন করা যায়। এই তিথিতে স্বয়ং নারায়ণের বাস থাকে গঙ্গায়। তাই যদি এই তিথিতে গঙ্গায় স্নান করা হয় তাহলে জীবন থেকে দুঃখ, রোগব্যাধি একেবারে মুছে যায় এবং জীবন সুখ সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে।

কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিহার রঞ্জন জানান, প্রতিবছরের ন্যায় আজকেও এই অক্ষয় তৃতীয়ার অনুষ্ঠানটি যাথাযথ্য মর্যাদায় আমরা পালন করছি। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সার্বিক সহায়তা আমরা পাচ্ছি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত সকল ভক্তদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা এখানে রাখা হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে, তাই আমরা বাড়তি নজরদারি রেখেছি। সাদা পোষাকেও আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন