কলাপাড়ায় অর্ধশত দালালদের কাছে জিম্মি হাজার হাজার কৃষক
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে এক শ্রেনীর দালাল চক্রের হয়রানি মূলক মামলায় হাজার হাজার কৃষক বিপাকে পড়েছে। এ দালাল চক্রের সদস্যরা কলাপাড়া এবং পটুয়াখালীর অধিবাসী বলে জানা গেছে।
সরকার জমি অধিগ্রহনের জন্য নোটিশ করলেই দালাল চক্রটি নোটিশ প্রাপ্ত কৃষকদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে আসছে। এ সব দালালরা এক সময় কৃষকের জমিতে খুটা গেড়ে ভূমিদস্যুতা করতো। বর্তমানে দস্যুতার ধরন পরিবর্তন করে মামলায় অর্থ বিনিয়োগ করছে। দালাল চক্রের এ সদস্যদের অনেকের এক সময় নূন আনতে পানতা ফুরনোর মত অবস্থা থাকলেও হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে রাতারাতি অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন।
জানা গেছে, সরকার পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে কৃষকের শতশত একর জমি অধিগ্রহন করেছে। কৃষকরাও দেশের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির কথা বিবেচনায় নিয়ে তাদের পৈত্রিক ভিটেবাড়ী, জমি-জমা দেশের স্বার্থে ছেড়ে দিয়েছেন।
তবে অধিগ্রহনের নোটিশ পাওয়ার সাথে সাথে ভূমিদস্যু ওই দালাল চক্রটি নিরীহ এ কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আটকে দিচ্ছে তাদের অধিগ্রহনের টাকা। এতে অনেক কৃষক বছরের পর বছর মামলা চালিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ফলে ভূমিদস্যু চক্রটি তাদের দালালদের মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে নিগোসিয়েটের কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কেটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত এ কৃষকদের মধ্যে উপজেলার লালুয়া এবং ধানখালী ইউনিয়নের কৃষকই বেশী বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে লালুয়া পশরবুনিয়া গ্রামের অধিবাসী মোঃ জসিম মিয়া জানান, জমি অধিগ্রহনের ক্ষেত্রে চার ধারা নোটিশের পর কোন মামলা গ্রহণযোগ্য না, তারপরও ভূমিদস্যুরা হয়রানি কিংবা অবৈধ উপায়ে টাকা কামানোর উদ্দেশ্যে এ মামলা দিয়ে যাচ্ছে। এরা হাজার হাজার কৃষকদের জিম্মি করে ফেলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
একই ইউনিয়নের ছোনখলা গ্রামের মঞ্জু তালুকদার জানান, ভূমিদস্যুদের জ্বালায় কৃষক অতিষ্ঠ। অনেক কৃষক পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
ধানখালী ইউনিয়নের মধুপাড়া গ্রামের কৃষক নিপুল জানান, তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা দিয়েছে একটি চক্র। ফলে বছরের পর বছর তারা অধিগ্রহনের টাকা পাচ্ছেন না। তিনি ভূমিদস্যু চক্রের সাথে সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।