ইরানের কোনও প্রক্সি বাহিনী নেই: খামেনি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তেহরানের প্রক্সি বাহিনী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরান যদি কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পথ বেছে নেয়, তাহলে তাদের প্রয়োজন হবে না। তেহরানে সফররত একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতে এই মন্তব্য করেছেন খামেনি।
লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ, গাজায় ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ার এক বছর এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের দুই সপ্তাহ পর খামেনি এই মন্তব্য করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র এসব গোষ্ঠী ইরান-সমর্থিত এবং ওই অঞ্চলে ইরানের ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ হিসেবে পরিচিত।
খামেনি বলেছেন, ‘‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের কোনও প্রক্সি বাহিনী নেই। ইয়েমেন লড়াই করছে, কারণ তাদের বিশ্বাস আছে। হিজবুল্লাহ লড়াই করছে, কারণ বিশ্বাসের শক্তিই তাদের যুদ্ধে মাঠে টেনে আনে। হামাস এবং (ইসলামি) জিহাদ লড়াই করছে, কারণ বিশ্বাসই তাদের তা করতে বাধ্য করছে। তারা আমাদের প্রক্সি হিসাবে কাজ করে না।’’
ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেন, ‘‘আমেরিকানরা বলেছেন, ইরান এই অঞ্চলে তার প্রক্সি বাহিনী হারিয়েছে! এটি আরেকটি ভুল। তিনি বলেন, আমরা যদি পদক্ষেপ নিতে চাই, তাহলে আমাদের প্রক্সি বাহিনীর প্রয়োজন নেই।’’
চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিদ্যুৎগতির হামলার মুখে রাজধানী দামেস্কের পতন ঘটে। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় তেহরানের মিত্র বাশার আল-আসাদ পরিবারের কয়েক দশকের শাসনের অবসান ঘটেছে।
খামেনি সিরিয়ায় শক্তিশালী, সম্মানিত একটি গোষ্ঠীর উত্থানের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন, দেশটির যুবকদের হারানোর কিছু নেই।
‘‘যার বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট এবং জীবন অনিরাপদ; তার কী করা উচিত? যারা এই নিরাপত্তাহীনতার পরিকল্পনা করেছে এবং যারা এটি বাস্তবায়ন করেছে তাদের বিরুদ্ধে তাকে শক্তি নিয়ে দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে দাঁড়াতে হবে এবং সৃষ্টিকর্তা চাইলে তারা জয়ী হবেন।’’
সিরিয়ার পলাতক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের ইসরায়েল-বিরোধী প্রতিরোধ অক্ষে কৌশলগত ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিশেষ করে প্রতিবেশী লেবাননে হিজবুল্লাহর কাছে ইরানের অস্ত্র সরবরাহের অন্যতম প্রধান পথ ছিল সিরিয়া। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের এই প্রতিরোধ অক্ষের মধ্যে রয়েছে হামাস, হুথি এবং ইরাকের ছোট ছোট কিছু শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীও। ইসরায়েল ও তার প্রধান সমর্থক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় এসব গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ সর্বোচ্চ নেতা খামেনির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। দেশটির এই নেতা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরানে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করার অভিযোগও তুলেছেন। তিনি বলেন, এই ব্যাপারে যারা আমেরিকার ভাড়াটে দস্যুর ভূমিকা পালন করবে, ইরানের জনগণ নিজেদের শক্তিশালী পায়ের নিচে সেই ভাড়াটেদের পিষ্ট করবে।
সূত্র: রয়টার্স।