
জুলাই বিপ্লবের আলোকে বাজেট না হওয়া হতাশাজনক
বজলুর রহমান বাবলু
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সৈনিকদের ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় বিজয়নগরের সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন অফিসে। ২১ জুন শনিবার সকালে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সৈনিক ও বৈষম্য বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদের সংগঠনের সভাপতি হারুনূর রশিদ।
অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র আইনজীবী এড. কে.এম জাবির বলেন, সরকার যদি জুলাই বিপ্লবের সৈনিকদের যথার্থ মূল্যায়ন ও মর্যাদা দিত বা গত ১৭ বছর ধরে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতো তাহলে বাজেট নিয়ে প্রশ্নের উদয় হতো না। বর্তমান বাজেটে তাদের জন্য আলাদা বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। সেই বরাদ্দ থেকে জুলাই বিপ্লবের শহীদ, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের বিশেষ পুনর্বাসন কার্যক্রমে সুবিধা দিতে পারতো। ১৯৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে সম্মাননা ও সুবিধা দেয়া হয়েছে বর্তমানে সেই সুবিধাটা জুলাই বিপ্লবের সৈনিকদের জন্য অপরিহার্য ছিল। যেহেতু বর্তমান সরকার জুলাই বিপ্লবের সরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্য বর্তমান সরকার জুলাই বিপ্লবের সৈনিকদের জন্য কোন আলাদা বরাদ্দ রাখেনি।
সভায় প্রবদ্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক কালাম ফয়েজী।
বক্তব্য রাখেন সাবেক জেলা জজ আনিসুর রহমান কামাল, এড. আফজাল হোসেন, বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা মোসাদেক হোসেন স্বপন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শহীন, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা বজলুর রহমান বাবলু, নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর, হাসান মনজুর, আবু মহী মুসা, আলতাফ হোসেন, গণতান্ত্রিক ঐক্যের রফিকুল ইসলাম আসাদ প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, আওয়ামী আমলারা জায়গায় জায়গায় বসে আছে। তারা জুলাই বিপ্লবের অর্জনকে বানচাল করার জন্য বদ্ধ পরিকর। এদের ক্ষমতায় রেখে জুলাই বিপ্লবের সৈনিকদের সেবা দেয়া সম্ভব হবে না।
বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা মোসাদেক হোসেন স্বপন বলেন, বর্তমান বাজেট খাতায় আছে বাস্তবে নেই, বাজেট হয় কতক দুস্কৃতিকারীদের আরো ধনী করার জন্য। এদেশে গরীব-দুঃখী, কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি মানুষের জন্য বাজেটে বিশেষ কোন বরাদ্দ থাকে না। তবে জুলাই বিপ্লবে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের চলতি বাজেটে একটা বরাদ্দ রাখা দরকার ছিল। দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ১০ বছর মেয়াদী দীর্ঘ পরিকল্পনা দরকার। তাহলেই কেবল দেশ উন্নত হবে।
প্রবন্ধকার কালাম ফয়েজী বলেন, অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের যে ৬০০ কোটি টাকা ট্যাক্স প্রত্যাহার করেছিলেন, সেটাকে এনে জুলাই অভ্যুত্থানের সৈনিকদের জন্য একটা ফান্ড গঠন করতে পারেন এবং প্রতি বছরের আয় থেকে জুলাই বিপ্লবে ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদান প্রদান ও পুনর্বাসনের কার্যক্রম চালাতে পারেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শহীন বলেন, জুলাই বিপ্লবের নামধারী নায়কদের কেউ কেউ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এবারের প্রকৃত নায়কদের জন্য গণবান্ধব বাজেট দরকার ছিল। যা দিয়ে আহত-নিহতরা উপকৃত হতে পারতেন।
অনুষ্ঠান শেষে সংগঠনের সভাপতি হারুনূর রশিদ মোনাজাত পরিচালনা করেন এবং সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?