Dark Mode
Monday, 23 June 2025
ePaper   
Logo
অটোস্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নাঃগঞ্জে ডাবল মার্ডার

অটোস্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নাঃগঞ্জে ডাবল মার্ডার

নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলায় অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। নিহতরা হলেন- হাফেজীবাগ এলাকার প্রয়াত সাদেক আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৭০) এবং পাশের শাহী মসজিদ এলাকার প্রয়াত আব্দুল জলিল মুন্সির ছেলে মেহেদী হাসান (৪২)। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। শনিবার (২১ জুন) রাত ৯টায় উপজেলার শাহী মসজিদ ও সিরাজদৌলা ক্লাব মাঠ পৃথক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর রেললাইন এলাকার একটি অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখলকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে সাবেক কাউন্সিলর ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা হান্নান সরকারের অনুসারী বাবু-মেহেদী এবং মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসারের অনুসারী রনি-জাফর পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

এ বিরোধের জেরে গত শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন। গতকাল রাতে জাফর পক্ষের সমর্থক পারভেজের বাবা আবদুল কুদ্দুসকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ।

পুলিশ জানায়, এ হত্যার প্রতিশোধ নিতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন্দর সিরাজদৌল্লাহ্ ক্লাব মাঠের সামনে মেহেদী ও তাঁর লোকজনকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন রনি-জাফর পক্ষের লোকজন। তাঁরা মেহেদীকে পিটুনি দেন এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মেহেদীর বোনের স্বামী মাহফুজুল সৌরভ বলেন, “বন্দরে যখন মার্ডারটা হয় তখন মেহেদী ছিল বাড়িতে। ও থাকতো অন্তত এক কিলোমিটার দূরে আমিন আবাসিক এলাকায়। মার্ডারের পর প্রতিপক্ষের লোকজনকে খুঁজতে গেলে রাস্তায় মেহেদীরে পাইয়া যায়।“মেহেদীরে তখন তুইল্লা নিয়া সিরাজউদ্দোল্লা ক্লাবে নিয়ে বেধড়ক মারে। বুকে, মাথা আর মুখ একেবারে থেতলে দিছে। আমরা লাশ পাইছি হাসপাতালে।”

এদিকে, ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কাউসার আশা বলেন, “রনি আর মেহেদীরা সব একই গ্রুপের লোক ছিল। ছাত্রদলের রাজনীতির সময় থেকেই দেখছি, তারা ছিল আপন দুই ভাইয়ের মতো। আওয়ামী লীগের আমলে দুইজনে একসঙ্গে জেলও খাটছে।“কিন্তু গত ছয়মাস ধরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।”

তবে, এই দ্বন্দ্বে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে সাবেক এ কাউন্সিলর বলেন, “দুইজনই হান্নান সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিল। স্থানীয় কারণে দুইজনের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এইটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।“মেহেদী ও রনি দু’জনই আমার ভাইয়ের মতো। আমার সঙ্গে হান্নান কাকারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কিশোর গ্যাং ও মাদকের দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক কারণে আমাকে জড়ানো হচ্ছে। এটি পলিটিক্যাল কোনো ব্যাপার না।”

তবে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে হান্নান সরকারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও তার সংযোগ পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি হত্যার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রোববার দুপুরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বন্দর রেললাইন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখা যায়।

যদিও ঘটনার পর থেকে উভয়পক্ষের লোকজন এলাকাছাড়া বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। এর মধ্যে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, “স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড দুটি ঘটেছে। এই ঘটনা যারা ঘটাইছে এবং যারা নেপথ্যে আছেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”এ ঘটনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলাও হবে এবং রাতেই র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অন্তত তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের শীর্ষ এ কর্মকর্তা।

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ছুরিকাঘাতে কুদ্দুস ও মেহেদী নামের দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

Comment / Reply From

Vote / Poll

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?

View Results
হ্যাঁ
0%
না
0%
মন্তব্য নেই
0%

Archive

Please select a date!