ডার্ক মোড
Tuesday, 22 April 2025
ePaper   
Logo
মুন্সীগঞ্জে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ আলু উৎপাদন :   হিমাগারে জায়গা না হওয়ায় আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

মুন্সীগঞ্জে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ আলু উৎপাদন : হিমাগারে জায়গা না হওয়ায় আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

 

মো. মাসুদ খান, মুন্সীগঞ্জ(দক্ষিণ)

 

আলু উৎপাদনের অন্যতম শীর্ষ জেলা মুন্সীগঞ্জে আলু এখন কৃষকের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। হিমাগারে আলু রাখার জায়গা না পেয়ে সস্তায় আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক। তবে কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিচ্ছে নিজস্ব উপায়ে ঘরে আলু সংরক্ষণ করার জন্য। গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশে ৪০ লাখ মেট্রিক টন আলু বেশী উদপাদন হয়েছে। গত বছর দেশে আলু উৎপাদন হয়েছিল ৮০ লাখ মেট্রিক টন। আর এ বছর আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন। আর কৃষ যে পরিমান টাকা আলু উৎপাদনে কেজি প্রতি খরচ করে বর্তমানে আলু তার তার অনেক কমে বাজার বিক্রি হচ্ছে। তাই এ বছর আলুতে কৃষকের লোকসান হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ বছর মন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলনের পরও কৃষকের মুখে এবার হাসি নেই। হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে না পারা এবং ন্যায্য দর না পাওয়ায় ঘাম ঝড়ানো সোনার ফসলই এখন গলার কাটা হয়ে দেখা দিয়েছে। জমিতে আলু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ টাকায়। আর তাদের উৎপাদন খরচ পরেছে অন্তত ১৮ টাকা। তাই পুজি হারানোর শঙ্কায় রয়েছে কৃষক। আর এর সুযোগ নিচ্ছে আগে হিমাগারের কোটা কিনে রাখা মধ্য স্বত্যভোগীরা। এতে প্রান্তিক কৃষক পরেছেন বিপাকে। এ অবস্থায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় হিমাগার চালু এবং জরুরি ভিত্তিতে আলু বিদেশে রফতানির দাবি তাদের।

মন্সীগঞ্জ শহর বাজারে আলু ক্রয় করতে আসা এক ভোক্তা জানান, আলুর বাজার ধস নেমেছে। এখন যদি আমাদের দেশ থেকে আলু বাইরের দেশের রপ্তানি না করে, তাহলে কৃষকের উৎপাদিত আলু পুরোটা বিক্রি করা সম্ভব হবেনা।  কৃষক বাচাতে হলে আলু রপ্তানির কোন বিকল্প নেই।

মুক্তারপুরের এলাইড কোল্ড স্টোরেজে ট্রলারে করে আলু সংরক্ষণ করতে আসা কৃষক আব্বাস জানান, যারা কোল্ড স্টোরেজে আলুর কোটা কিনছেন আলু ভরে যাওয়াতে তারাও আল ফেরত নিচ্ছেননা। আর যারা কোটা না রেখেছেন তারা তো আরো বিপদে পড়েছেন। এখন কোল্ড স্টোরেজে কোন জায়গা নেই। এখন আমরা যারা কষক আছি তাদের মরন ছাড়া কোন উপায় নাই। দেশে এ বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। গেল বছর এর পরিমাণ ছিল ৮০ লাখ মেট্রিক টন। সস্তায় আলু বিক্রি না করে অহিমায়িত ঘরে আলু সংরক্ষণের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সামির হোসেন সিয়াম বলেন, ‘অহিমায়িত আলু সংরক্ষণের জন্য একটি ঘরে ২৫ থেকে ৩০ টন আলু কষক সংরক্ষণ করে রাখতে পারে। এখানে আলু রাখলে কিন্ত তারা নরমালি খরচটা উৎপাদন থেকে সামান্য কিছু লাভে কিন্তু বাজারে বিক্রি করে দিলেও তারা কিন্তু লাভবান হতে পারবেন। এই ঘরে আলু রাখলে আলুর সহজে পচে না। আর আলুর যে ওয়েট লস এটা খুবই কম হয়।’

জেলা কষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আলু উৎপাদনের শীর্ষস্থানীয় জেলা এই মুন্সীগঞ্জ। আমাদের মুন্সীগঞ্জের সচল ৫৮টি কোল্ড স্টোরেজে ৫ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন আলু রাখা সম্ভব। ইতিমধ্যে ৪ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আরেকটি অংশ কিন্তু অন্যান্য জেলা থেকে আসছে। তাহলে আমরা বলতেই পারি যে একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আলু কিন্তু বাইরে রয়ে গেছে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি তারা যেন স্থানীয়ভাবে আলু সংরক্ষণ করেন। তারা আলু মাচায় বা বস্তায় রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত  আলু অতিরিক্ত একটা ভালো দামে বিক্রি করার সুযোগ তৈরি হতে পারে।

মন্সীগঞ্জে সচল ৫৮ হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৫ লাখ ৪০ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন। জেলায় এবার ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে ১০ লাখ ৭৩৮ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু তা সংরক্ষণে হিমাগারে জায়গা না হওয়ায় বিপাকে এখন কৃষককুল

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন