ডার্ক মোড
Friday, 02 May 2025
ePaper   
Logo
বাউফলে ছেলের কাধে বাবার লাশ

বাউফলে ছেলের কাধে বাবার লাশ

বাউফল (পটুয়াখালী)  প্রতিনিধি
 
 মধ্যে রাতে মালদ্বীপ থেকে বাড়িতে আসে বাবারলাশ । রাতভর বাবার লাশের পাশে ছিলেন ছেলে। বাবার লাশ কাধে করে জানাজা নামাজ পড়ে লাশ দাফন করে দাখিল পরীক্ষা দিতে হলে গিয়েছেন ছেলে। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে বুধবার ৩০ এপ্রিল পটুয়াখালীর  বাউফল উপজেলার বড় ডালিমা গ্রামে।
 
নিহতের স্বজনেরা জানান,  বড় ডালিমা গ্রামের আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে জসিম উদ্দিন দীর্ঘ ৬ ছয় বছর ধরে মালদ্বীপে ছিলেন। মালদ্বীপের কুলহুধুফুশি আইনল্যান্ডে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করতেন। গত ২৬ এপ্রিল মালদ্বীপের কুলহুধুফুশিরিজওনালায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মারা যাওয়ার চারদিন পর মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল   মালদ্বীপ থেকে লাশ বাড়িতে আনা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।শেষ বারের মত জসিমকে দেখতে তার বাড়িতে ভীড় জমায় পড়াপ্রতিবেশি বন্ধ বান্ধব।
 
নিহতের বড় ভাই ফজলুর রহমান  ফোরকান বলেন, তাঁর ভাই জসিম উদ্দিনের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। ছেলে মো. মেহনাব হোসেন পূব খাজুরবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে  এ বছর দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছেন। কালাইয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষায় দিচ্ছেন।  আজ বুধবার তারকৃষি পরীক্ষা। মেয়ে জারিন ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
 
নিহত জসিম উদ্দিনের ছেলে বলেন, বাবা আগে সৌদি আরব থাকতেন। পরে মালদ্বীপে যান।   আমার জন্মের পর তাকে মাত্র  ৫বছর কাছে পেয়েছি। তখন আমি ছোট ছিলাম। তার সাথে কাটানো কোনো স্মৃতি তেমন মনে পড়ছে না। মালদ্বীপে আছেন ৬বছর ধরে। তার সাথে কথা হত ভিডিও কলে। আসছে কোরবানির ঈদে  বাড়ি ফেরার কথা। বাবা ঠিকই ফিরছেন তবে  লাশ হয়ে। যেদিন মারা যায় সেদিন আমার ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। আজ বাবার লাশ কাধে করে দাফন শেষ করে কৃষি পরীক্ষা দিতে হলে যাচ্ছি। 
 
 নিহতের স্ত্রী মাসুমা আক্তার বলেন,  প্রায় ৭ বছরআগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন জসিম উদ্দিন। স্বপ্ন ছিল কাজ করে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন। সংসারে ফিরিয়ে আনবেন স্বচ্ছলতা। কথা ছিল  ঈদুল আযহায় বাড়ি ফিরবেন। পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করবেন।  এখন ঈদের আগেই  বাড়ি ফিরবেন। তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে ফিরছেন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন