নরসিংদীর সর্বত্র বেগুনি রঙে রাঙ্গানো কৃষকের শিমের মাচা
নরসিংদী প্রতিনিধি
শাকসবজী উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ৬ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজী শিমের চাষ করা হয়েছে। জেলাব্যাপী মাঠ জুড়ে বেগুণি রঙে রাঙ্গানো শীতের সবজি শিমের মাচা, যা দেখলে চোখ জুড়ে যায়।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ৬ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজী শিম চাষ করা হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার ৮৬৮ মেট্রিক টন। এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ৮৭০ হেক্টর, পলাশে ৯৯৫ হেক্টর, শিবপুরে ১ হাজার ২০৮ হেক্টর, মনোহরদীতে ১ হাজার ৬০ হেক্টর, বেলাবতে ১ হাজার ৫৫ হেক্টর ও রায়পুরা উপজেলায় ১ হাজার ১৭২ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজী শিমের চাষ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে আগাম শীতকালীন সবজী উঠতে শুরু করেছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শিম এর ভাল দাম পেয়ে অত্যন্ত খুশী।
সূত্রটি আরো জানায় যে, নরসিংদী জেলায় ১ হাজার ৩১৫ জন কৃষকের মধ্যে প্রনোদনাস্বরূপ সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সার, বীজ, রোগবালাই কিটনাশক ওষুধ বিতরণ করা হয়।
সরেজমিনে শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের কুন্দারপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ওই গ্রামের সবজী চাষী মোঃ ওসমান গণি তার শিমের মাচা পরিচর্যা করছেন। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, এবছর তিনি তার ৫ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। ইতিমধ্যে তিনি তার জমিতে উৎপাদিত শিম উত্তোলন করে বাজারে নিয়ে ২ হাজার ৫০০টাকা মন দরে বিক্রি করেছেন। এবছর শিমের দাম খুবই ভাল। শিমের দাম পেয়ে তিনি অত্যন্ত খুশী।
মনোহরদী উপজেলার লেবুতলা গ্রামের সবজী চাষী মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, এবছর তিনি কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীদের পরামর্শ নিয়ে ২ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর ফলন খুব ভাল হয়েছে। তিনি তার জমিতে উৎপাদিত শিম উত্তোলন করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন। তিনি বলেন, বাকী দিনগুলোতে আল্লাহ চাহেত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে বিগত বছরের লোকসান কাটিয়ে নিতে পারবো।
পলাশ উপজেলার চরনগরদী গ্রামের চাষী সাহাজ উদ্দিন বলেন, এবছর তিনি তার সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেছেন। আল্লাহ চাহেত এবছর ফলন খুব ভাল হয়েছে। শিমের দামও বেশ ভাল। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ২০ হাজার টাকারও বেশী শিম বিক্রি করেছেন। এসময় তার মুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠছিল। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্দব সরকার। এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় সরকারের কাছ থেকে বেশ সহযোগিতা পেয়েছি। তাই ফসল ফলাতে তার কোনো কষ্ট হয়নি।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আজিজুর রহমান জানান, এবছর সময় মত বৃষ্টি এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে শিমের উৎপাদন ভাল হয়েছে। সামনে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অধিক ফসল উৎপাদিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।