ডার্ক মোড
Friday, 01 November 2024
ePaper   
Logo
আমি মনোনয়ন পেলে অন্য যে কোন প্রার্থী র থেকে বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হবো : মশিউর মালেক

আমি মনোনয়ন পেলে অন্য যে কোন প্রার্থী র থেকে বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হবো : মশিউর মালেক

মো: আরিফুর রহমান সুজন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে সারাদেশে চলছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচার প্রচারণা। এরই ধারাবাহিকতায় বরগুনা-২ (বেতাগী-বামনা-পাথারঘাটা) আসন থেকে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল মালেক (মশিউর মালেক)।

মশিউর মালেক ১ ডিসেম্বর ১৯৬২ সালে বেতাগীতে জন্মগ্রহন করেন। তিনি শিক্ষা জীবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ সালে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৯৯১ সালে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

দি কান্ট্রি টুডে এর বিশেষ প্রতিবেদক মো: আরিফুর রহমান সুজনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবনের জানা অজানা সব কথা।

আরিফ সুজন : আপনার আ:লীগের/ ছাত্র রাজনীতির শুরুটা কীভাবে?

মশিউর মালেক : ধন্যবাদ আপনাকে, আমি ১৯৭২ সনে ছাত্রলীগের সদস্যপদ গ্রহন করি এরপর ১৯৭৩ সনে বেতাগী হাইস্কুলের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে নাট্য বিভাগীয় সদস্য হই এবং ১৯৭৯ সালে বেতাগী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। ছাত্রলীগের সুলতান রহমান পরিষদের জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হই।

আরিফ সুজন : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে আপনার কী কী অবদান আছে বলে আপনি মনে করেন?

মশিউর মালেক : লম্বা কথা আপনাকে আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে কিছু বলবো, আমি ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সিরাজুদ্দীন সাহেবের নেতৃত্ব বরগুনা শহরে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ গ্রহণকরি।
১৯৯৪ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য ও আইন সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করি এবং ২০০২ সালে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করি এবং ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। ১৯৭৯, ১৯৮৬,১৯৯১, ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি।

২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমি আদালতে মামলা দিয়ে প্রতিহত করেছি। এছাড়ও আমি জয়নাল আবেদীন ফারুক, শওকত মাহমুদ, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, "আমার দেশ " পত্রিকা এবং সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মাওলানা মামুনুল হক গং দের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সম্মান রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর পরামর্শে দেশে ও বিদেশে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বতর্মান সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা করে জনমত তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি। "জয় বাংলা " কে জাতীয় শ্লোগান করার জন্য আমি এবং আমার সংগঠন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আন্দোলন, সভা-সমাবেশ, স্মারকক লিপি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখি।

আরিফ সুজন : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আপনার নেত্রী কেন আপনাকে মনোনয়ন দিবেন?

মশিউর মালেক : আমি মনে করি ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগে যোগদান করার পর থেকে আমি সবসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে এবং আমার নেত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আর্দশ থেকে কোন দিন বিচ্যুত হইনি। আমি মনে করি বরগুনা-২ আসনে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের অন্যকারো আমার মত রাজনৈতিক ইতিহাস সমৃদ্ধি এবং ক্লিন ইমেজের লোক আর নেই, তাই আমাকে নেত্রী মূল্যায়ন করবেন বলে আমি আশা রাখি।

আরিফ সুজন : স্মার্ট বরগুনা-২ গঠনে আপনার কর্মপরিকল্পনা বা নির্বাচনী ইশতেহার সম্পর্কে জানতে চাই?

মশিউর মালেক : আমি আমার নির্বাচনী ইশতেহার নির্বাচনী লিফলেটে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছি তারপর এখানে আপনাকে সংক্ষিপ্ত ভাবে কিছু বিষয় বলতে চাই। আমার নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে বরগুনা-২ (বেতাগী-বামনা-পাথারঘাটা) গণ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, অবকাঠামোগত, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রকার সরকারি/বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে আরও আধুনিকায়ন ও সেবার মান উন্নয়নে কাজ করবো। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি আইটি পার্ক এবং বরগুনাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবো। সাধারণ মানুষের বিশেষ করে যুবকদের জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি ব্যায়ামগার স্থাপন করবো। মোট কথা সাধারণ মানুষের যে সকল চাহিদা আছে তা চিহ্নিত করে তা পূরণে অগ্রনী ভূমিকা রাখবো। একটি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাগরিকদের যে সেবা পাওয়া দরকার তার জনসাধারনকে দোরগরায় পৌঁছাতে আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আরিফ সুজন : স্থানীয় রাজনীতিতে আপনার অবদান কী?

মশিউর মালেক : ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবার নিহত হওয়ার পরে অনেক যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মামলায় পলাতক থাকেন। অনেকে আটক হন সেই সময় আমি ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে বেতাগীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ধরে রেখেছি সেই দু:সময়ে এবং সেই সময় কোন দিবস পালন করা যেত না সরকারী ও সামাজিক ভাবে পালন করা যেত না সেই সময় আমি একজন নমব-দশম শ্রেনীর ছাত্র হিসেব এবং ছাত্রলীগকে নিয়ে জাতীয় দিবস গুলো পালন করে ছাত্রলীগের রাজনীতি ধরে রেখেছিলাম এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আমি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিসহ মানবতাবিরোধীদের বিচারের দাবি আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম এবং ১/১১ সেনা সমর্থিত সরকার নেত্রীকে গ্রেফতার করে তখন আমিই সর্বপ্রথম "শেখ হাসিনা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ" গঠণ করে জননেত্রীর মুক্তির আন্দোলন করেছি।

আরিফ সুজন : বরগুনা-২ আসনে আওয়ামী লীগ এর আরও যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের প্রতি আপনার ম্যাসেজ টা কী থাকবে?

মশিউর মালেক : আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, অন্য যারা বরগুনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগ এর মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের রাজনৈতিক জীবন এবং আমার রাজনৈতিক জীবন তুলনা করে দেখবেন তাদের অবস্থান এবং আমার অবস্থান কোথায়। আর একটা কথা বলবো প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকে মনোনয়ন দিবেন আর যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে সবাইকে সাথে নিয়ে বিজয়ী হওয়ার জন্য কাজ করবো। নেত্রী যদি আমাকে যোগ্য মনে না করে, অন্য কাউকে মনোনয়ন দেন আমি তার জন্য কাজ করে নৌকাকে বিজয়ী করবো। তবে আমি বিশ্বাস করি আমি মনোনয়ন পেলে অন্য যে কোন প্রার্থীর থেকে বেশী ভোট পেয়ে নৌকাকে বিজয়ী করতো পারবো ইনশাল্লাহ।

আরিফ সুজন : নির্বাচন কালীন সময়ে আচারনবিধি বা প্রশাসনের ভূমিকা বিষয় আপনার মতামত কি?

মশিউর মালেক : আমি মনে করি নির্বাচন কালীন সময়ে সকল প্রার্থীদের সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে যা বুঝায় সেটাই প্রসাশনের কাছে আমার আশা থাকবে অন্য দিকে সব দলের প্রার্থীরা আচরণবিধি মেনে চলবেন।

আরিফ সুজন : আপনার জন্মস্থান বেতাগীর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন?

মশিউর মালেক : বেতাগীর নেতাকর্মীদের বলবো মনোনয়ন যেই পাক সে আমি বা অন্য কেউ আমাদের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে পাশাপাশি আওয়ামী লীগের উন্নয়ন গুলো সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরবে।

আরিফ সুজন : আপনি কয়েকবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন সে বিষয় কিছু বলেন?

মশিউর মালেক : আমি পরপর তিন বার এর মধ্যে যুক্তরাষ্টে দুইবার এবং ইতালিতে একবার আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলাম। খুব কাছে থেকে দেখেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানেই গেছেন সেখানেই বিশ্বনেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে।

আরিফ সুজন : আপনার পারিবারিক জীবন সম্পর্কে কিছু বলেন?

মশিউর মালেক : পারিবারিক জীবনে আমি চার সন্তানের জনক। আমার স্ত্রী একজন আওয়ামী লীগের নেত্রী তিনি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পারিবারিক ব্যস্ততা এবং সন্তানদের দেখা-শোনা করার জন্য তিনি এই পদ থেকে ইস্তফা দেন।

বর্তমানে তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আমি নিজে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি পেশায় আছি। আমার বড় ছেলে অস্ট্রেলিয়াতে সরকারি চাকরি করে টেলি কমিনিউকেশন বিভাগে। আমার দ্বিতীয় ছেলে আর্কিটেক্ট সে ঢাকাতেই আছে। তৃতীয় ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে। সবার ছোট আমার কন্যা আর্কিটেক্ট বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

আরিফ সুজন : ইংরেজি দৈনিক The Country Today সম্পর্কে কিছু বলেন?

মশিউর মালেক : The Country Today একটি নতুন পত্রিকা। এর সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো যিনি এই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব হেমায়েত হোসেন তিনি একজন পেশাদার সাংবাদিক এবং তিনি দেশের অন্যতম সেরা ইংরেজি পত্রিকা The New Nation, The Morning Sun পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। কোন নিউজ ছাপা উচিত কোনটা উচিত না ইত্যাদি বিষয় তার অভিজ্ঞতার ছাপ আমি দেখতে পাচ্ছি। আমি আশা করি অচিরেই The Country Today দেশের অন্যতম শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় পরিণত হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন