ডার্ক মোড
Saturday, 26 April 2025
ePaper   
Logo
সাতক্ষীরায় অপরিপক্ক ও রাসায়নিক মেশানো আম বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে কঠোর প্রশাসন

সাতক্ষীরায় অপরিপক্ক ও রাসায়নিক মেশানো আম বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে কঠোর প্রশাসন

 

এসএম শহীদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা 

সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত ক্যালেন্ডারের তারিখের আগে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে গিয়ে ধরা পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। ভ্রাম্যমাণ আদালতে দেওয়া হচ্ছে সাজা। আদায় করা হচ্ছে জরিমানা। বিনষ্ট করা হচ্ছে অপরিপক্ক রাসায়নিক পদার্থ মেশানো আম।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে এসব অপরিপক্ক আম।

 সাতক্ষীরার আমের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে ও অপরিপক্ব আম পেড়ে বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে গাছ থেকে আম পাড়ার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়।

গতবছর ৫ মে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় ওই আম সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।

নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৯ মে থেকে মুম্বাই ও গোলাপ খাস, ১১ মে থেকে গোবিন্দ ভোগ, ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ন্যাংড়া এবং ১০ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করা যাবে বলে জানানো হয়েছিল।

কিন্তু সময়সূচির আগেই একটি অসাধু চক্র প্রতিদিনই সাতক্ষীরার কোথাও না কোথাও অপরিপক্ব আম পেড়ে রাসায়নিক দিয়ে পাকানোর অভিযোগে বিপুল পরিমাণ আম জব্দ ও বিনষ্ট করা হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে রংপুরে পাঠানোর সময় ৯০০ কেজি গোবিন্দভোগ আম জব্দ করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। সাতক্ষীরা শহরের বাঁকাল হাইস্কুল মোড়ে একটি পরিবহন থেকে এসব আম জব্দ করা হয়। এসময় আটক করা হয়েছে এক ব্যবসায়ীকে।

আটক ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ গাজী(৪৫) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার গরাণবাড়িয়া গ্রামের আহমাদ আলীর ছেলে।

সদর উপজেলার কমিশনার (ভূমি) অতীশ সরকার জানান, শ্যামনগর থেকে দুটি পরিবহন যোগে অপরিপক্ক ক্যামিকেল মিশ্রিত আম রংপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বৃহস্পতিবার রাতে শহরতলীর বাকাঁল হাইস্কুল মোড়ে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে ৪৫টি ক্যারেটে থাকা ৯০০ কেজি অপরিপক্ক কেমিকেল মিশ্রিত গোবিন্দভোগ জাতের আম জব্দ করা হয়। এ সময় আটক করা হয় ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ গাজীকে। রাত ১০টায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জব্দকৃত আম বাঁকাল হাইস্কুলের পাশে রোলার দিয়ে বিনষ্ট করা হয়।

এছাড়া ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে সাতক্ষীরার বাইপাস সড়ক থেকে ট্রাকভর্তি প্রায় ৪ মেট্রিকটন আম আটক করা হয়। সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ উক্ত আমগুলো আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ ক্যারেট গোবিন্দভোগ আম গাড়ির চাকায় ফেলে বিনষ্ট করা হয়। এছাড়া রাসায়নিক পদার্থ মুক্ত ১৬০ ক্যারেট আম রাতেই ৪৫ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) শামিনুল হক, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুল ইসলামসহ পুলিশের একটি টিম। সাতক্ষীরা থেকে অপরিপক্ক আম ট্রাক ভর্তি করে রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হচ্ছিল বলে জানান কৃষি অফিসার মনিরুল ইসলাম।  

তারা আরও জানান, সাতক্ষীরার আমের দেশব্যাপী সুনাম রয়েছে। কিন্তু একটি অসাধু চক্র রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে অপরিপক্ক আম পাকিয়ে তা বাজারজাত করার চেষ্টা করছে। জেলার আমের সুনাম রক্ষায় এবং ভেজাল খাদ্য বাজারে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত ক্যালেন্ডারের তারিখের আগে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত না করার জন্য বলা হয়েছে। তবে আমে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর প্রমাণ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই রাতে পুলিশ ওই সড়ক থেকে রাজধানী ঢাকায় পাঠানোর সময় আরও ৫ ক্যারেট আম আটক করে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন