ডার্ক মোড
Thursday, 20 March 2025
ePaper   
Logo
নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে  কিশোর খুন, তরুণ আটক

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে কিশোর খুন, তরুণ আটক

 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ 

নারায়ণগঞ্জ জেলায় ব্যাটারি চুরির অপবাদে জিহাদ (১৭) নামের এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার ফতুল্লার লামাপাড়ার দরগাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জিহাদ পটুয়াখালীর সদর থানার আউলিয়াপুরের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তাঁরা সপরিবার ফতুল্লা মডেল থানার পশ্চিম লামাপাড়ার বসবাস করত। অন্যদিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আরমান (১৮) লামাপাড়ার বাসিন্দা আখতার শেখের ছেলে।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, লামাপাড়া দরগাহ মসজিদের সামনে আরমানের চাচা শাহিন মিয়ার একটি ফলের দোকান আছে। মঙ্গলবার ইফতারের পর রাত পৌনে আটটার দিকে শাহিন সেই দোকান থেকে বাইরে বের হন। কিছুক্ষণ পর দোকানে ফিরে দেখেন, বাল্ব জ্বালানোর কাজে ব্যবহৃত ব্যাটারিটি কে বা কারা চুরি করেছে।

তাৎক্ষণিকভাবে জিহাদ সহ দুই কিশোরকে ওই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। এ ঘটনা জানতে পেরে আরমান ঘটনাস্থলে গিয়ে জিহাদ ও তাঁর দুই সহযোগীকে চুরি করেছে কি না, জিজ্ঞেস করেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এতে আরমান ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় গিয়ে ‘সুইচ গিয়ার’ এনে জিহাদকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে গুরুতর আহত হয় জিহাদ।

আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, এ ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা আরমানকে আটক করেন এবং জিহাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে জিহাদ মারা যায়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

পিতার ওপর প্রতিশোধ নিতে নারায়ণগঞ্জে শিশু পুত্রকে অপহরণ করে হত্যা ও লাশ গুম

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় পিতা হাশিম মিয়ার ওপর প্রতিশোধ নিতে তার ৭ বছরের শিশু পুত্র মুস্তাকিনকে অপহরন করে হত্যা ও লাশ গুম করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৯ মার্চ) জেলা ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- ফতুল্লা থানার লামাপাড়া দরগাহ বাড়ী মসজিদ সংলগ্ন সালাম মিয়ার ভাড়াটিয়া ওবায়েদউল্লাহ বাবুর পুত্র তানজীল (২৪) ও একই বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃত ফরজুল ইসলামের পুত্র নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলম (২০)।

জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ও নিহত শিশুর পরিবার পাশাপাশি ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। একটি মোবাইল নিয়ে তানজিলের সাথে নিহত শিশু মুস্তাকিনের বাবা হাশিম মিয়ার সাথে ঝগড়া হয়। এতে করে তানজিল তার একই বাসার ভাড়াটিয়া সহযোগী নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলমকে নিয়ে শিশুটিকে অপহরন সহ হত্যা করার পরিকল্পনা করে।

প্রথমে তারা ফতুল্লা ডিআইটি মাঠ থেকে ৪৫০ টাকা দিয়ে একটি সুইচ গিয়ার কিনে। তারপর পরিকল্পনানুযায়ী ৫ জানুয়ারী সন্ধ্যার দিকে প্রথমে শিশুটির হাতে ২০ টাকা দেয় তানজিল। পরে পায়ে হাঁটিয়ে রাস্তায় এনে দুটি চিপস কিনে হাতে দিয়ে অটোরিক্সায় করে ফতুল্লা গুদারাঘাট দিয়ে কেরানীগঞ্জের কাওটাইল এলাকায় যায়।

সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদের পেছনে ঝোপের ভিতরে নিয়ে গিয়ে শিশুটির মুখে কস্টটেপ পেচিয়ে মাটিতে শুইয়ে দেয় নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহালম। এ সময় তানজীল তার সাথে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে লামাপাড়াস্থ বাসায় চলে আসে।

এদিকে, শিশুটিকে না পেয়ে তার পরিবার যখন সন্ধান চেয়ে মাইকিং করেছিলো ঘাতকরাও সে সময় মাইকিং করে। দুতিন দিন পর তারা তাদের নিজ গ্রামের বাড়ী ময়মনসিং চলে যায়। ঘটনার ১৩ দিন পর ১৮ জানুয়ারী দুপুরে লোক মারফত জানতে পেরে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। কোন পরিচয় না পাওয়ায় লাশটি অজ্ঞাত নামা হিসেবে দাফন করা হয়।

পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারী কেরানীগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। অপরদিকে শিশুটির বাবা ৬ জানুয়ারী ফতুল্লা মডেল থানায় একটি নিখোঁজ সাধারন ডায়েরী করেন। পরবর্তীতে নিখোঁজ শিশুটির সন্ধান না পেয়ে শিশুটির বাবা ১৪ ফেব্রুয়ারী ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন।

সেই মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডের ৭২ দিন পর ১৮ মার্চ সকাল নয়টার দিকে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার নান্দাইল উপজেলার সামনে থেকে প্রথমে নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলমকে পরে দুপুর বারোটার দিকে একই জেলার ফুলবাড়িয়া থানার কাচিজোড়া থেকে তানজিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের দেখানো মতে পুলিশ রাত ৮ টার দিকে ফতুল্লা থানার লামাপাড়াস্থ তানজিদের বাসা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ারটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে নারায়নঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) "ক" সার্কেল হাসিনুজ্জামান জানান, শিশুটির বাবার উপর প্রতিশোধ নিতেই ফতুল্লা থেকে শিশুটিকে অপহরন করে নদীর ওপারে কেরানীগঞ্জ থানার কাওটাইল এলাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়। সেখানকার পুলিশ নিহত শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করে এবং পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা হয়।

শিশুটির বাবা প্রথমে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি নিখোঁজ সাধারন ডায়েরী করেন। পরবর্তীতে একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ময়মনসিংহ থেকে তানজিল ও নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহালমকে গ্রেপ্তার করে। তারা তখন হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করে। তাদের কথামত কেরানীগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করা হলে শিশুটির পরিবার থানায় গিয়ে পুলিশের নিকট রক্ষিত নিহত শিশুর জামা কাপড় থেকে পরিচয় সনাক্ত করা হয়।

শীতলক্ষ্যা নদীতে ৬টি নৌযানকে জরিমানা

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে চলাচলকারী ৬টি নৌযানকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিআইডব্লিউটিএ'র ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে নৌ নিরাপত্তা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন শীতলক্ষ্যা নদীর কাঁচপুর ব্রীজ হতে রুপসী পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসময় বিআইডব্লিউটিএ'র নৌ নিরাপত্তা বিভাগের উপপরিচালক নাহিদ হোসেন, পরিদর্শক হাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এবং নৌ পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, অভিযানকালে ১০-১৫ টি নৌযান পরিদর্শন করা হয়। এসময় বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ৬ টি নৌযানকে সর্বমোট ৯০,০০০/ (নব্বই ) হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন