ডার্ক মোড
Tuesday, 29 April 2025
ePaper   
Logo
দোহারে মৈনটঘাটে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

দোহারে মৈনটঘাটে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

 

 

মাহবুবুর রহমান টিপু, দোহার(ঢাকা) থেকেঃ

দোহার উপজেলার মাহমুদপুরইউনিয়নের পদ্মা নদীর মৈনটঘাট নৌ—রুটে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের লঞ্চ ঘাট ওস্প্রীডবোটে ইজারাদারদের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছে বাড়ি ফেরাযাত্রীরা।শনিবার বিকেলে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, শনিবার ভোর থেকেই এ পথে ঈদে ঘরমুখো লক্ষাধিক যাত্রীরা গুলিস্থান থেকে বাসযোগে মৈনটঘাটে আসেন। পরে ঘাট এলাকালা থেকে স্প্রীডবোট—ট্রলারযোগে লঞ্চযোগে ফরিদপুরের গোপালপুর ঘাটে দ্রুত সময়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে বাড়িফিরছেন। দেশের ফরিদপুর বিভাগসহ দক্ষিণ—পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম সহজ নৌরুট হচ্ছে এই মৈনটঘাট। এ নৌরুট হয়ে ঈদ মৌসুমে দৈনিক দশ হাজারের বেশী মানুষ পারাপার হয়ে থাকে।ঈদের আগে ঘরে ফিরতে মানুষের ঢল নামে এই ঘাটে। সব মিলিয়ে দুর্ভোগের ঈদযাত্রায় পরিণত হয় এই নৌরুট। তাই যাত্রী চাপ মোকাবিলায় ঈদের সময় ট্রলার ৩৫টি ও শতাধিক স্প্রীডবোট রাখা হয়েছে বলে জানান ঘাট কতৃপক্ষ।এছাড়াও
লঞ্চযোগে পাড়াপাড় হচ্ছে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ। ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি স্প্রীডবোর্টে ১২ জন করে যাত্রী বহন করার কথা থাকলেও বেশিরভাগ স্প্রীডবোর্টেই ১৪ থেকে ১৫ জন যাত্রী বহন করে হচ্ছে। ভাড়া ১৫০ টাকা করা থাকলে ২৫০/৩০০ টাকা নিচ্ছে ইজারাদার কতৃপক্ষ। জনপ্রতি ২৫০/৩০০ টাকা ভাড়ায় ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পদ্মা পারাপার করা হচ্ছে। যাত্রী পারাপারে স্প্রীডবোটে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা হলেও প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করেই স্পিডবোটগুলো নৌরুটে চলাচল করেছে দিনভর।অপরদিকে লঞ্চে প্রতিটি যাত্রীর কাছ  থেকে ৮০ টাকার পরিবর্তে দেড়শত টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।অধিক যাত্রীর চাপে এ সময় শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায় বলেও স্বীকার করেন প্রভাবশালী ঘাট ইজারাদারের ম্যানেজার বাসার মুন্সি।ফরিদপুরের চর ভদ্রাসনে বাড়ি ফেরা দম্পত্তি আবুল কালাম বলেন,গুলিস্তান থেকে সরাসরি মৈনটঘাটে দুইটি আলাদা পরিবহন কোম্পানি যাত্রীদের নিয়ে চলাচল করে থাকে মৈনটঘাটে। কিন্তু এঘাটে পৌছেলে বদলে যায় চিত্র।এখানকার বাস— লঞ্চঘাট,স্প্রীডবোট ঘাট ইজারাদাররা ভাড়া দ্বিগুণ করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ চক্ররা। স্প্রীডবোটে মাত্র এক ঘন্টার পথ ফরিদপুর, সদরপুর,চরভদ্রাসনসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার যাত্রীরা মৈনট ঘাট দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে ছুটে যাচ্ছে
গ্রামের বাড়ীতে। তাই এই মূহুর্তে ভাড়া প্রতিজন ২৫০/৩০০ টাকা চাইলে না নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দম্পতি জানান, উত্তাল পদ্মায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোটে চড়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছি আমরা হাজার হাজার যাত্রী। সরকারি আদেশ থাকলেও এ সুযোগে ইজারাদার ও বোট মালিকরা লোক দেখানো অপর্যাপ্ত কিছু পুরোনো লাইফ জ্যাকেট রেখে যাত্রী পারাপার করতে দেখা যাচ্ছে। কিছু বললে ভয় দেখায় স্পিডবোট মালিক, শ্রমিক ও ইজারাদারের লোকজনেরা। জয়পাড়া সরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা মো.আশরাফ গাজী বলেন,ঘরমুখো যাত্রীরাও অসচেতন অবস্থায় এবং বাধ্য হয়েই শিশু সন্তানসহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুরোনো লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করে আবার কেউ কেউ না ব্যবহার করেই স্পিডবোট ও ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিছে। এসময়ে আমরা সহ শিশু সন্তান নিয়েও লাইফ জ্যাকেট ছাড়া পদ্মা পাড়ি দিতে দেখা গেছে। ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে
তিনি বলেন ১৫০ টাকার ভাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ২৫০/৩০০ টাকা জন প্রতি নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ইজারাদারদের পাটনার আব্দুল আজিজ জানান,শনিবার থেকেই সি—বোটের ভাড়া ১৭০ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্রশাসনিক খরচ রয়েছে। এই ভাড়া ২৫০ টাকা নেওয়া হবে ঈদের তিন চারদিন পর্যন্ত। এ বিষয়ে ঘাট ইজারাদার ও মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ইঊনুস খানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি প্রথমেই প্রতিবেদককে ধমক ও হুমকিদেন।এক পর্যায়ে প্রতিবেদক কি পরিমান লেখাপড়া করেছে জানতে চেয়ে ফোনের
লাইনটি কেটে দেয়। পরে বার বার তার নাম্বারে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। এ বিষয়ে মৈনটঘাট বাস পরিবহন সমিতির নেতা তুষার মিয়া কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকের সহযোগীকে দেখে নিবে বলে হুমকি—ধমকি দিয়ে সরেপড়েন।পরে তার মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দিলে তিনি শুধু হ্যালো হ্যালো বলে লাইনটি কেটে দেন। কুতুবপুর নৌ—পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন, ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম অভিযান চালিয়ে সাত হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেন নাই।এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম জানান, লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্রলারযোগে ও বাসভাড়া অতিরিক্ত আদায় করার বিষয়ে অবগত হওয়ার পর অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের কথা বিবেচনায় রেখে লঘু অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে আবারও অভিযোগ পেলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দোহার,ঢাকা।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন