
জমে উঠেছে নরসিংদীর বাবুর হাট, এবার ৫ হাজার কোটি টাকার বেঁচাকেনার আশা
নরসিংদী প্রতিনিধি
পবিত্র মাহে রমজানের শুরুর পর থেকেই শুরু হয়েছে ঈদের আমেজ। তার সঙ্গে পুরোদমে চলছে বেচাঁকেনার ধুম। ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম পাইকারী কাপড়ের বাজার বাংলার ম্যানেচেষ্টার নামে খ্যাত নরসিংদীর শেখেরচর বাবুর হাট। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের বাজার জমজমাট হওয়ায় ৫ হাজার কোটি টাকা বেঁচাকেনার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে শেখেরচর বাবুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাপড় ব্যবসায়ী ক্রেতারা কাপড় কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন। সূর্য উঠার পরপরই পাইকাররা বাজারে আসতে শুরু করছেন। বাজারের পাশে ভিড়তে থাকে দূরদূরান্ত থেকে আসা লরি ও পিকআপ ভ্যান। বেলা বাড়তেই ক্রেতা-বিক্রেতার ধর কষাকষিতে মুখোর হতে শুরু করে বাজার।
কারণ এ বাজারে গামছা থেকে শুরু করে শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, পাঞ্জাবীর কাপড়, খান কাপড় ও বিছানার চাদরসহ দেশীয় তৈরী প্রায় সব ধরনের কাপড় ও পোশাক মেলে এই হাটে। ছোট বড় প্রায় ৭ হাজার দোকানে সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন চলে বেঁচাকেনা। সারা বছরই কাপড় ও পোষাক বিক্রি হয় এই হাটে। তবে ঈদের সময় এ বাজারে কাপড় বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
এবারও রোজার শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে এই হাটে স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাপড় ব্যবসায়ী ক্রেতারা ভীর করতে শুরু করেন। এ হাটে দিনব্যাপী কেনাকাটা করে ট্রাকও পিকআপ ভ্যান বোঝাই করে ফিরে যাচ্ছেন নিজ এলাকায়। ক্রেতাদের মতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এবং এ বাজারে এক সাথে সব ধরনের দেশীয় কাপড়ের বিপুল সমাহার থাকায় এ বাজার থেকে কাপড় কিনতে আসছেন তারা।
তবে ক্রেতারা জানিয়েছেন এ বছর সব ধরনের দেশীয় কাপড়ের দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন সূতার ও রং এর দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। যার ফলে এ বছর কাপড়ের দাম একটু বেশী। ঢাকা ইসলামপুর মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী মেমার্স জননী ক্লথষ্টোরের মালিক মো: আব্দুল জলিল বলেন, একমাত্র এই হাটেই পাইকারী দামে দেশীয় সব ধরনের কাপড় এক সঙ্গে পাওয়া যায়। তাই দোকান সাজাতে এখানে কাপড় কিনতে আসা।
তবে এ বছর কাপড়ের দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশী। এ বাজারে পাইকারী কাপড় বিক্রেতা মো: মামুন মিয়া বলেন, এ বছর রোজার শুরু থেকেই সন্তোষজনক বেঁচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে সূতা ও রং এর দাম বাড়ার কারণে সবধরনের কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মো: রাশেদুল হাসান রিন্টু জানান, বাবুর হাট মূলত দেশের প্রান্তিক মানুষের সব ধরনের কাপড় চাহিদা মেটানোর হাট।
দেশীয় কাপড়ের মোট চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করে থাকে। শেখেরচর বাবুর হাট বণিক সমিতির সভাপতি মো: বোরহান উদ্দিন বলেন, গতবারের চেয়ে এবারের ঈদে বেঁচাকেনা কম হচ্ছে। এর কারণ উৎপাদন খরচ বেশী হওয়ায় কাপড়ের দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ কাপড় কম কিনছেন।