কিশোরগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগে নেয়া দেড়লাখ টাকা ফেরতে আপোষ মিমাংসা
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা ইটনা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে ব্যাপক জাল- জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। সেবাগ্রহীতাকে জিম্মি করে অবৈধভাবে অর্থ আদায়, জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে রাজস্ব ফাঁকি, নির্ধারিত ফিসের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মূল দলিলের নকল উত্তোলন করার জন্য সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে ২/৩ গুণ বেশি ফি আদায়, নকলের সার্টিফাইড কপি অফিসে জমা না দিয়ে ভূয়া কেস নাম্বার দিয়ে গ্রাহকের নিকট সরবরাহ করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা, মূল দলিলে গ্রহীতার নাম পরিবর্তন করে দেয়াসহ নানা অপকর্মের মহোৎসব চলছে ইটনা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে বলে অভিযোগ থাকলেও প্রকাশ্যে কোন অভিযোগ করেনি।
এমনই একটি অভিযোগ তুলে খোদ ইটনা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার শরীফুল ইসলাম ও জনৈক দলিল লিখকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক দলিল গ্রহিতা। জেলা সাব-রেজিস্ট্রার, ইটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইটনা সেনা ক্যাম্প বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন জনৈক ভূক্তভোগী হযরত আলী।
৩১ ডিসেম্বর ও ২ জানুয়ারীতে দেয়া লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ইটনা সাব রেজিস্টার অফিসে তার ক্রয়ক্রিত ৭ শতাংশ বাড়ী দলিল করতে যান। যাহার ক্রয়মূল্য সাড়ে চার লাখ টাকা মাত্র। তখন দায়িত্বরত সাবরেজিস্টার বলেন এই জায়গা বাড়ী তাহলে অবশ্যই স্থাপনা আছে। তাই এর দলিল মূল্য দিতে হবে ১৯ লাখ টাকা। যাহার দলিল খরচ সর্বসাকুল্য ৩ লাখ। এ সময় দলিল লিখক শাহ আলম ঠাকুরের মধ্যস্থতায় ১৯ লাখ টাকার দলিল হবে, এজন্য আমার কাছ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দলিল খরচ নেন। বিষয়টির অভিযোগের কপি গণমাধ্যমের হাতে পৌঁছলে শুরু হয় দৌড়ঝাপ। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে অভিযোগকারীর টাকা ফেরতের মাধ্যমে মিমাংসা হয়েছে বলেও জানা যায়।
ইটনা বড়হাটির প্রতারনার স্বীকার অভিযোগকারী দলিল গ্রহিতা হযরত আলী বলেন, আমি নকল দলিল হাতে পাওয়ার পর জানতে পারি আমার কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকার দলিলের খরচ নিলেও সাড়ে ৪ লাখ টাকার দলিল প্রতারণামূলক ভাবে করে দেয়া হয়েছে। যার সর্বসাকুল্য খরচ সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা। দলিল নং ১০৫৪ রেজিষ্ট্রি সাফ কাওলা হয়। অর্থাৎ প্রতারণা ও দূর্নীতির মাধ্যমে আমার কাছ থেকে দেড়লাখ টাকা বেশি নিয়েছিল। অভিযোগের পর প্রতারনা ও দূর্নীতির মাধ্যমে নেয়া দেড়লাখ টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে দলিল লিখক শাহআলম ঠাকুর বলেন, এত টাকা নয়, কিছু টাকা বেশি নেয়া হয়েছিল তা ফেরত দিয়ে সমাধান করা হয়েছে এখন আর নিউজের কিছু নেই।
অভিযোগের ব্যাপারে ইটনা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত সাব রেজিস্টার শরীফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অফিসের বাহিরের ঘটনা। তাছাড়া এগুলো দলিল লিখকদের সাথে দাতা গ্রহিতাদের দামধর করে এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
অভিযোগের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা রেজিষ্টার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্তের জন্য খুব দ্রুত একজনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হবে।