ডার্ক মোড
Monday, 06 January 2025
ePaper   
Logo
৬ বছর ধরে ঝুলে আছে কুমিল্লা নোয়াখালী ৪ লেনের কাজ

৬ বছর ধরে ঝুলে আছে কুমিল্লা নোয়াখালী ৪ লেনের কাজ

বদিউজ্জামান (তুহিন) নোয়াখালী

বিগত সরকারের আমলের এলজিডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালের রাজনৈতিক প্রভাব, দখলদারদের মামলা, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ৬ বছর ধরে ঝুলে আছে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ।

এতে যানজটের নিত্য ভোগান্তিতে লাকসাম, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের যাত্রীরা। ৫৯ কিলোমিটার এই মহাসড়কের ৪ লেনের সুফল আটকে আছে মাত্র ৮ কিলোমিটারের জন্য। জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত মহাসড়কের প্রকল্প শেষ করার দাবি যাত্রী ও চালকদের। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে, প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে। জানা যায়, কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চল, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দাদের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক। ২০১৮ সালে ২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়কটির ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দীর্ঘদিনেও শেষ হচ্ছে না কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ। এই পর্যন্ত ৩ বার বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ, তবুও কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ!

অথচ সড়কটির প্রায় ৯৭% শতাংশ কাজ শেষ হলেও ঝুলে রয়েছে লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার, শানিচোঁ ও লাকসাম বাজারের কিছু অংশের কাজ। দীর্ঘ সময় ধরেও সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে বাগমারা বাজার এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিয়ে আদালতে একটি রিট করা হয়েছে যা জানতো না সড়ক বিভাগ! তাছাড়া লালমাই উপজেলার ১.৮ কিলোমিটার শানিচোঁ অংশে এডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের বাড়ির পাশে ১.৬ কিলোমিটার এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা রয়েছে।

জানা যায়, মামলা সংক্রান্ত জটিলতা শেষ হয়েছে আরও আগে তবুও অধিগ্রহণ জটিলতা যেন অদৃশ্য শক্তি কারণে আটকে আছে। এ ছাড়াও লাকসামে এপিপি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪.৫ কিলোমিটার সড়কে তৈরি হবে ওভারপাস। সেই ওভারপাস তৈরি হলে তার উপরে ফোর লেন নির্মাণ করা হবে বলে বহু আগেই জানিয়েছে সওজ কর্তৃপক্ষ! সরজমিন গিয়ে দেখে যায়, আঞ্চলিক মহাসড়কটির ফোর লেনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বাগমারা বাজার অংশে যানজট বেড়েছে। বাগমারা বাজারের আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় প্রায় তিন শতাধিক অটো-মিশুক চলাচল করায় এই সড়কে সবসময় যানজট লেগেই থাকছে। সিএনজিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি প্রতিদিন লাকসাম থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত যাতায়াত করে থাকি কিন্তু বাগমারা বাজারে আসলে অনেক সময় ১ থেকে দেড় ঘণ্টা জ্যামে পড়ে থাকতে হয়।

যার কারণে নিয়মিতভাবে মালিকের ভাড়ার টাকাও দিতে কষ্ট হয়। ট্রাকচালক জহির বলেন, ট্রাক ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন সময় নিমসার বাজার থেকে কাঁচামাল নিয়ে লাকসাম, নোয়াখালী যেতে হয় তবে বাগমারা বাজারের জ্যামের কারণে সঠিক সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারি না, যার কারণে প্রতিনিয়ত আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে তা সঠিক, টাকাও চলে গিয়েছে কিন্তু বিষয়টা সবাই জানে আশা করছি ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার আমাদের টাকা দিবে এবং আমরা কাজ শুরু করে দেবো।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এখন ভূমি অধিগ্রহণ চলমান রয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ফাইলটি অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব দ্রুত অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আমাদের কাছে টাকা প্রস্তুত করা আছে। আমরা অধিগ্রহণ শেষ করে রাস্তার কাজটি শেষ করতে পারবো।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন