হাতিয়ায় রাতের আঁধারে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া পৌরসভায় রাতের আঁধারে এক আবুধাবি প্রবাসী আব্দুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে সন্ত্রাসীরা। এসময় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের ভিতরে বাড়ীর দুই গৃহবধুসহ ৩ জনকে গুরুতর আহত করে আক্রমণকারীরা। এ ঘটনার পরদিন থানায় মামলা হলেও ৫ দিনেও কোন অপরাধী এখনো গ্রেফতার হয়নি। অপরদিকে আসামিরা মামলার বাদী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। আসামিদের হুমকি ধমকিতে ভুক্তভোগী পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
সন্ত্রাসীদের হামলায় বাড়ির দুই গৃহবধুসহ তিনজন আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার রাতে হাতিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের গুল্যাখালী গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
হামলার ঘটনায় সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে আবুধাবি প্রবাসী আব্দুর রহমানের পিতা বৃদ্ধ অলি উদ্দিন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে হাতিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। পরবর্তীতে অভিযোগটি মামলা আকারে এন্ট্রি হলেও ৫ দিন পেরিয়ে গেছে অথচ এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
থানায় লিখিত অভিযোগে প্রবাসী আব্দুর রহমানের পিতা অলি উদ্দিন উল্লেখ করেন যে, রোববার রাতে হঠাৎ কিছু সন্ত্রাসী তাদের বাড়িতে আক্রমণ করে উত্তর পাশে সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে। বড় বড় হেমার দিয়ে প্রাচীরে আঘাত করার শব্দ শুনে বাড়িতে থাকা মহিলারা এগিয়ে এলে তাদেরকে আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। ১০-১৫মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীরা প্রায় ৪০ ফুট সীমানা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পেলে।
পরে বাড়িতে প্রবেশ করে তারা মহিলাদের উপর আক্রমণ করে। এসময় মহিলাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উপরও আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রবাসী ছাইফুর রহমানের স্ত্রী সূবর্ণা, বোন আকলিমা ও ভাই ওহিদুর রহমান আহত হয়। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে হাতিয়া থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতো বড় একটি ঘটনায় মামলা হলেও ৫ দিন পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ পুলিশ প্রশাসন একজন আসামিকেও আটক করতে পারেনি। উল্টো আসামিরা আমাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। এসব দেখে মনে হচ্ছে দেশে কোন বিচার ব্যবস্থা নেই।
আবুধাবি প্রবাসী আব্দুর রহমানের পিতা অলি উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাঁর ছেলে প্রবাসী আব্দুর রহমান, সাইফুর রহমান, আয়াত সহ তিন ভাই এই বাড়িতে বসবাস করে আসছে। তাদের সাথে প্রতিবেশী আছিয়ল হকদের বাড়ির অংশ নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে হাতিয়া নৌ-বাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ দিলে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। সবশেষ বৈঠকে মীমাংসা না হওয়ায় পুনরায় বৈঠকের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ সেই বৈঠকের অপেক্ষা না করে হঠাৎ রাতের আধারে হামলা করে।
তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসীরা সবাই দাঁড়ালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। তারা পরিকল্পিত ভাবে প্রাচীর ভাঙার জন্য লোহার বড় হাতুড়ি ও হামার নিয়ে আসে। তাদের আক্রমণে তাঁর পুত্রবধূ, মেয়ে ও ছেলে আহত হয়।
এই বিষয়ে মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা হাতিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মনির উদ্দিন জানান, ঐদিন রাতে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডে প্রবাসীর বাড়িতে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাচীর ভাংচুরের আলামত পাওয়া যায়। প্রতিপক্ষের লোকজন পুলিশ যাওয়ার আগে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে প্রাচীর ভাঙার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন থানায় একটি মামলা হয়েছে। এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি তবে আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।