ডার্ক মোড
Tuesday, 14 October 2025
ePaper   
Logo
সুন্দরবন রক্ষায় বড় উদ্যোগ ৪৫ কিমি নাইলনের বেড়া, ওয়াচ টাওয়ার ও কিল্লা নির্মাণ

সুন্দরবন রক্ষায় বড় উদ্যোগ ৪৫ কিমি নাইলনের বেড়া, ওয়াচ টাওয়ার ও কিল্লা নির্মাণ



 এস.এম.  সাইফুল ইসলাম কবির, সুন্দরবন 

:দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের  মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে অনুপ্রবেশ, অগ্নিকাণ্ড ও দস্যুতা রোধে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনকে সুরক্ষিত রাখতে লোকালয়সংলগ্ন এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে নাইলনের বেড়া, দুটি আরসিসি ওয়াচ টাওয়ার এবং দুটি উঁচু কিল্লা।
এসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় চার কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় অনুপ্রবেশ ও অগ্নিকাণ্ড রোধে ইতোমধ্যে লোকালয়সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের ফেন্সিং নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন করে আরো ১৪ কিলোমিটার এলাকায় ফেন্সিং নির্মাণের কাজ চলছে। পাশাপাশি চরম ঝুঁকিপূর্ণ ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ও ধানসাগর ফরেস্ট টহল ফাঁড়িতে দুটি আরসিসি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরো বলেন, লোকালয়সংলগ্ন প্রায় ৪৫ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ফেন্সিং নির্মাণ সম্পন্ন হলে একদিকে অনুপ্রবেশ ও আগুনদস্যুদের প্রবেশ বন্ধ করা যাবে, অন্যদিকে লোকালয় থেকে মানুষ ও গৃহপালিত প্রাণীর বনাঞ্চলে ঢোকাও রোধ করা সম্ভব হবে।
কইসঙ্গে বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণীর লোকালয়ে প্রবেশও বন্ধ হবে। চাঁদপাই রেঞ্জের বৈদ্যমারী থেকে শরণখোলা রেঞ্জের দাসেরভারানী টহল ফাঁড়ি পর্যন্ত এই ফেন্সিং, ওয়াচ টাওয়ার ও কিল্লা নির্মাণ সম্পন্ন হলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
এছাড়া অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম জোরদারে নতুন ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, পন্টুন ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার প্রস্তুতিও চলছে। এসব অবকাঠামো নির্মাণ হলে সুন্দরবনে আগুন, দস্যুতা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত হবে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই ও ধানসাগর রেঞ্জে গত কয়েক বছরে একাধিকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
বন বিভাগের তদন্ত অনুযায়ী, এসব অগ্নিকাণ্ডের অনেকগুলো ছিল পরিকল্পিত। আগুন দস্যুরা মাছ ও বনজসম্পদ দখল এবং চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে আগুন লাগিয়ে দেয়। ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে অন্তত আটটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যার মধ্যে তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক একর বনভূমি পুড়ে যায়। এতে বনজ উদ্ভিদ, বন্যপ্রাণী ও পাখির আবাসস্থল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন