সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ এবারও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে
নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ এবারও ধারাবাহিকভাবে সাফল্য ধরে রেখেছে। সারা দেশে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে এবারও। গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে অংশ নেওয়া ১৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাশ করেছে।
এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৮১ জন শিক্ষার্থী। যা জিপিএ-৫ এর হার শতকরা ৮৪.৬৫%। আর এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যূথানে নিহত, আহত ছাত্র-জনতাকে উৎসর্গ করেছে পাসকরা শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ ২০১২ সাল থেকে টানা তিন বছর ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। গত ২০১৫ সাল থেকে সেরাদের তালিকা না হলেও নিজেদের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে। গত মঙ্গলবার সকালে ফলাফলের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজ প্রাঙ্গনে ছুটে আসে। এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট ১৩৯৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে শতভাগ পাশসহ ১১৮১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯২৬ জন অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯১০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ১৯১ জন অংশ নিয়ে ১২২ জন ও মানবিক শাখা থেকে ২৭৮ জন অংশ নিয়ে ১৪৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও থার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, ‘ সারাদেশের সকল নামী প্রতিষ্ঠানের ফলাফল যখন বিপর্যয় হয়েছে সে তুলনায় আমাদের তরুণ শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতায় এবারও আমাদের ফলাফল তুলনামূলক অনেক ভাল। আমাদের শতভাগ পাশ করেছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমার নিরন্তর চেষ্টা আছে, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের এবারের ফলাফল গত ৫ আগস্টে নিহত, আহত ছাত্র জনতাকে উৎসর্গ করছি।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেরেম উল্লাহ আহসান বলেন, ‘ এ বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারনে বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষাগুলো না হওয়ায় সারাদেশেই ফলাফল কিছুটা বিপর্যয় হয়েছে। কিন্তু আমাদের কলেজের এ সাফল্য কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সরাসরি কঠোর তদারকি, শিক্ষক, অভিভাবক ও সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সম্ভব হয়েছে। এই কলেজের এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষক সকাল থেকে শুরু করে মধ্য রাত অবধি তাঁদের নিরন্তর চেষ্টায়ই ধারাবাহিক এই সাফল্য। প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন দিক-নির্দেশক শিক্ষক রয়েছে। ওই শিক্ষক শুধু লেখাপড়া নয়, তাদের খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, বিনোদন থেকে শুরু করে সকল ধরনের চাহিদা পূরণে সবসময় শ্রম দিয়ে আসছে’।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সালে প্রথম ফলাফলে পাসের হার ৯৯%, ২০০৯ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম এবং সমগ্র বাংলাদেশে ষষ্ঠ স্থান, ২০১০ সালে শতভাগ পাসসহ ঢাকা বোর্ডে চতুর্থ স্থান, ২০১১ সালে ঢাকা বোর্ডে সপ্তম, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ঢাকা বোর্ড তথা সমগ্র বাংলাদেশে শতভাগ পাসসহ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। পরবর্তীতে শিক্ষাবোর্ড থেকে সেরাদের তালিকা প্রকাশ বন্ধ হলেও সকল ক্যাটাগরিতে ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালেও দেশ সেরা ফলাফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।