যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করলেন ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ৯০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছেন। সোমবার শপথ নেওয়ার পর নির্বাহী এক আদেশ জারির মাধ্যমে এই সহায়তা কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ করেন তিনি।
তবে বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের আদেশ মার্কিন তহবিলের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ দেশটির অনেক কর্মসূচি ইতোমধ্যে কংগ্রেসে তহবিল বরাদ্দ পেয়েছে। আর এসব অর্থ ইতোমধ্যে বিতরণ অথবা ব্যয় করা হয়েছে।
সোমবার মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ নেওয়ার পর নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের ঝড় বইয়ে দেন তিনি। মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পানামা খাল ফেরত, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি-সহ কয়েক ডজন নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা শিল্প ও আমলাতন্ত্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা প্রায়ই আমেরিকান স্বার্থ এবং মূল্যবোধের বিরোধিতা করে। এই ধরনের কর্মসূচি বিদেশে এমন সব ধারণার প্রচার করে; যা বিশ্ব শান্তিকে অস্থিতিশীল করে তোলে। এটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীল সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বিরোধপূর্ণ।
প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্যগুলোর সঙ্গে একেবারে মিল না থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনও বৈদেশিক সহায়তা প্রদান করবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গত সপ্তাহে সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটিতে শুনানির সময় দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তিনটি মূল প্রশ্নকে সামনে রেখে কর্মসূচির ন্যায্যতা দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, এই সহায়তা কর্মসূচি কি আমেরিকাকে নিরাপদ করে তোলে? এটি কি আমেরিকাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে? এটি কি আমেরিকাকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করে তোলে?
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বাজেটের প্রায় এক শতাংশই যায় বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি তহবিলে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে এই বিদেশি সহায়তার সমালোচনা করছেন। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধে কিয়েভে বিশাল পরিমানের সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো সহায়তার পরিমাণ সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বাইডেন প্রশাসনের সাম্প্রতিক বৈদেশিক সহায়তা বিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে দুর্যোগ ত্রাণ, স্বাস্থ্য এবং গণতন্ত্রপন্থী উদ্যোগসহ বিভিন্ন খাতে মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য ৬৮ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন এই সহায়তার প্রধান প্রাপক ইসরায়েল (বার্ষিক ৩.৩ বিলিয়ন ডলার), মিসর (বার্ষিক দেড় বিলিয়ন ডলার) এবং জর্ডান (বার্ষিক ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার)। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এসব দেশের দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির কারণে এই সহায়তায় উল্লেখযোগ্য কাটছাঁটের সম্ভাবনা নেই।
সূত্র: এপি।