ডার্ক মোড
Saturday, 21 September 2024
ePaper   
Logo
বেড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে স্থবির একাডেমিক দাপ্তরিক কার্যক্রম

বেড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে স্থবির একাডেমিক দাপ্তরিক কার্যক্রম

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার বেড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক। গত সরকারের সময় দাপটের সাথে নিজেকে পরিচয় দিতেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ভাতিজী জামাই। সেই পরিচয়েই ছিলেন দারুণ প্রতাপশালী। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কলেজে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে সমালোচিত হলেও টুকু পরিবারের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর লাপাত্তা এই বিতর্কিত অধ্যক্ষ। গত এক মাসেরও বেশী সময় কলেজে অনুপস্থিত তিনি। আধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে ভেঙে পড়েছে কলেজটির একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে যারা যারা অংশ গ্রহণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এই অধ্যক্ষ। বেড়া সরকারি কলেজের যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের বাড়িতে রাতে পুলিশ পাঠিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেছেন এই অধ্যক্ষ।

এদিকে, গত ০৫ই আগষ্ট থেকে ২০ ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৪৬ দিন তিনি কলেজে অনুপস্থিত। তার কক্ষে ঝুলছে তালা। ঐ কক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার কারণে কলেজে পাঠদান করতে আসা অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ও করতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, আমরা প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তিনি আসবেন, আসবেন বলে এখন পর্যন্ত আসেনি। এতে আমাদের কলেজ পরিচালনা করতে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, স্যার সব সময় ডেপুটি স্পিকার পরিবারের লেজুড়বৃত্তি করেছেন। অন্যান্য শিক্ষকদেরও বাধ্য করেছেন। তার কথা না শুনলে হয়রানি নির্যাতনেরও দৃষ্টান্ত রয়েছে। পাশাপাশি বেড়া এলাকায় প্রতিটি নির্বাচনে তিনি অনিয়ম ও ভোটচুরি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অন্যতম সিপাহ সালারও ছিলেন তিনি।

বেড়া সরকারি কলেজের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালমান হোসেনের কাছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাঁধা দেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, বেড়া সরকারি কলেজের একটি ফেসবুক পেইজ আছে সেখানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ গ্রহণ না করতে বলা হয়েছিল।

আরেকজন সমন্বয়ক মো. তৌফিক হাসান রাফুল বলেন, আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিভিন্ন ভাবে বাধার সম্মুখীন হয়েছি। আমাদের ছবি দেখিয়ে দেখিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক স্যার পুলিশি হয়রানিতে সহযোগিতা করেছেন, আমি সহ আমার সহযোদ্ধাদের অনেকেই গত ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত বাসায় থাকতে বা ঘুমাতে পারিনাই। আমাকে বেশ কিছু আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের হুমকির মুখে পরতে হয়েছে।

এবিষয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন কলেজে উপস্থিত না হওয়া এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন এই বিষয়ে কোন কথা বলতে চাইনা। তবে খুব শীঘ্রই কলেজে যোগদান করবো।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোরশেদুল ইসলাম জানান, বেড়া কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক সাহেব যে ৪৬ দিন কলেজে আসেনি এটা আমার জানা নেই। মাঝখানে একদিন সে কলেজে এসে আমাকে ফোন দিয়েছিল। এ বিষয়ে কলেজ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন