বিশ্বখ্যাত দানবীর প্রিন্স আগা খানের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্বখ্যাত দানবীর ও শিয়া ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ইমাম প্রিন্স করিম আল হুসেইনি (আগা খান চতুর্থ) মারা গেছেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ পর্তুগালের লিসবনে তার জীবনাবসন হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
তার প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা আগা খান ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (একেডিএন) এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রিন্স করিম আগা খান ছিলেন শিয়া ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ৪৯তম পুরুষানুক্রমিক ইমাম। ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করলেও কেনিয়ার নাইরোবিতে তার শৈশব কাটে এবং তিনি ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক। দানশীলতার জন্য তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বজুড়ে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বহু হাসপাতাল, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি।
বিশ্বের ৩৫টি দেশে অবস্থানরত প্রায় দেড় কোটি ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ইমাম ছিলেন তিনি। ১৯৫৭ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে তার দাদার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন আগা খান। শৈশব নাইরোবিতে কাটলেও পরে তিনি সুইজারল্যান্ডে ফিরে যান এবং সেখানকার একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা নিয়ে লেখাপড়া করেন তিনি। একই বছর ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাকে বংশগত নয় এমন ‘হিজ হাইনেস’ খেতাব দিয়েছেন।
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার প্রয়াত মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন আগা খান। সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত বন্ধুর এই মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত রাজা চার্লস। তিনি ব্যক্তিগতভাবে আগা খানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন প্রিন্স আগা খান। বাহামাসে একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ, একটি সুপার-ইয়ট এবং ব্যক্তিগত বিমান ছিল তার। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার সম্পদ আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল ব্যবসা, বিশেষ করে ঘোড়া পালন ও রেসিং শিল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে।
তার সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৮০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ১৩ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হয়েছিল বলেও জানিয়েছে রয়টার্স।