বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা বুধবার
বগুড়া প্রতিনিধি
পৃর্ব বগুড়া তথা গাবতলীর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ফেব্রুয়ারী বুধবার। এই মেলাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে মহিষাবান ইউনিয়ন তথা উপজেলা জুড়ে।
জানা যায় , প্রায় ৪’শ বছর পূর্ব থেকে সনাতনধর্মের সন্ন্যাসী পুজা উপলক্ষে গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ী বন্দরের পূর্বধারে পোড়াদহ নদীর পশ্চিমধারে সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানা জমিতে একদিনের জন্য ঐতিহ্যবাহী এই পোড়াদহ মেলা বসে।
প্রতি বছর বাংলা সনের মাঘ মাসের শেষ অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার মেলাটি হয়। এ মেলাকে ঘিরে উৎসবের আমেজে মেতে উঠে মেলার আশপাশ গ্রামের সকল ধর্মের মানুষ। তবে মেলাটি একদিনের হলেও চলে দু’থেকে তিনদিন পর্যন্ত।
এ মেলায় অনেক লোকজনের সমাগম ঘটে। এই এলাকায় ঈদ বা অন্য কোন উৎসবে জামাই মেয়েদের কিংবা নিকট আত্মীয়দের দাওয়াত না দিলেও চলে, কিন্তু পোড়াদহ মেলায় সবাইকে দাওয়াত দিয়ে ধুমধাম করে খাওয়াতে হয়-যা এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
মেলা উপলক্ষে ওই এলাকার গৃহবধুরা আগেভাগেই ঘর-দুয়ার পরিস্কার করা, মুড়ি-খৈ ভাজা, নাড়কেলের নাড়ু তৈরী করা এবং ইতিমধ্যে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে।
মেলার স্থান পোড়াদহ এলাকায় হলেও লোকজনের বাড়তি হওয়ায় মেলাটি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্নস্থানে। পোড়াদহ মেলাকে ঘিরে মেলা বসে সুবোধ বাজার, দূর্গাহাটা, বাইগুনী, দাঁড়াইল, তরনীহাট, পেরীহাটসহ আশপাশের বিভিন্নস্থানে।
প্রতিবছরের মতো এবারের মেলারও মূল আকর্ষণ হলো দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ। তরে এবারও মেলায় বাঘাইর মাছ বিক্রি ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ রয়েছে। মাছ ছাড়াও বড় বড় মিষ্টি আর কাঠের তৈরি ফার্নিচার ওঠে এই মেলায়। ফার্ণিচার কেনা-বেচা মেলার দিনে চললেও মূলত মেলার পরের দুইদিনেও পুরোদমে কেনাবেচা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন আসবাবপত্র, বড়ই, কৃষি সামগ্রী ও খাদ্য দ্রব্য হাট-বাজারের মতোই ক্রয়বিক্রয় হয়।
এ ব্যাপারে মেলার পরিচালক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, জেলা প্রশাসনের অনুমতিক্রমে মেলাটি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এলাকার যুবসমাজের সহযোগিতায় সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ নেয়া হয়েছে। মেলায় নাগরদোলা, চরকি, সার্কাস, মোটর সাইকেল খেলাসহ শিশুদের জন্য অন্যান্য খেলা চলবে।
এ ব্যাপারে গাবতলী থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, পোড়াদহ মেলাটি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারা কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। মেলায় কোন প্রকার জুয়া কিংবা অশ্লীল নাচ-গান করার চেষ্টা হলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
এ বিষয়ে ইউএনও মোঃ আফতাবুজ্জামান-আল-ইমরান বলেন, মেলায় বাঘাইড় মাছ বেচা-কেনা নিষেধ রয়েছে। বন্য সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাঘাইড় মাছ বেচাকেনা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। কেহ মেলায় বাঘাইড় মাছ বেচার জন্য প্রদর্শন করলে এক বছরের কারাদন্ড অথবা ৫০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে।