ডার্ক মোড
Monday, 06 May 2024
ePaper   
Logo
ফুলবাড়ীতে তাপদাহে হাঁসফাঁস রোগীদের ভিড় বাড়ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

ফুলবাড়ীতে তাপদাহে হাঁসফাঁস রোগীদের ভিড় বাড়ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

চলমান তাপদাহে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। ডায়রিয়াসহ সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্তঃবিভাগের ধারণক্ষমতার চেয়ে দু-তিনগুণ বেশি রোগী থাকছে। বেডে জায়গা নেই, ঠাঁই হচ্ছে মেঝে ও বারান্দায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচদিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে তিন হাজার ৫৭৫ জনকে। একইভাবে অন্তঃবিভাগে গরম জনিতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৬৭৫ জন রোগী। এরমধ্যে ১০১ জন রোগী রয়েছেন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

গতকার মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় দিনাজপুর জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ২১ শতাংশ। বাতাসের গড় গতিবেগ প্রতিঘন্টায় ৯ কিলোমিটার।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ওয়ার্ডে ৫০টি শয্যা। তবে এখানে এখন রোগী থাকছে ৯০ থেকে ১০০ জন। কোনো কোনো দিন রোগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার শয্যার অভাবে অনেককে রাখা হচ্ছে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায়।

উপজেলার বারাইহাট এলাকা থেকে আসা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী রোগী বলেন, সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন, বেড পাননি। হাসপাতালে গরমে গাদাগাদি করে থাকতে গিয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগীরা।

উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর গ্রামের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম বলেন, তার শিশুপুত্রের আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে পাতলা পায়খানা ও সর্দি-জ্বর হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিয়েছেন। প্রচন্ড গরমের কারণে বাচ্চাটার এমন হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী আসমা আক্তার বলেন, প্রচন্ড তাপদাহে কমবেশি সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গরমে কারণে তিনিও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কিন্তু রোগীর ভিড় দেখে তিনিও অবাক হয়েছেন। কিন্তু কি করা! বাধ্য লাইন ধরে চিকিৎসক দেখিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে বাড়ী ফিরেছেন ওই কলেজ ছাত্রী।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সরোয়ার হোসেন বলেন, চলমান তাপদাহের জন্য প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা, বমি, পেট ব্যাথাসহ গরম জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বহিঃবিভাগে কমবেশি প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। বাড়ছে অন্তঃবিভাগে রোগীর সংখ্যা। ৫০ শয্যার স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে এর বেশি রোগী আসায় বাধ্য হয়ে রাবান্দা ও মেঝেতে রেখেই চিকিৎসাসেবা দিতে হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, প্রচন্ড গরমে শিশুদের ডায়রিয়া ও সর্দি-জ্বর বেড়ে গেছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। এ রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। তাদের কোনোভাবেই রোদে যেতে দেওয়া যাবে না।

বিশেষ করে সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একদম রোদে যাওয়া যাবে না। শীতল জায়গায় তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বেশি বেশি পানি ও বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। গোসল করাতে হবে। সুতির হালকা জামা-কাপড় পরাতে হবে। ফ্রিজের ঠান্ডা পানি বা খাবার শিশুকে দেওয়া যাবে না। গরমে হঠাৎ ঠান্ডা পানি বা খাবার খেয়ে বাচ্চারা সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন