ডার্ক মোড
Saturday, 27 April 2024
ePaper   
Logo
পূর্বাঞ্চলে রেলের কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এক মাসেও হয়নি কোনো মামলা

পূর্বাঞ্চলে রেলের কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এক মাসেও হয়নি কোনো মামলা

এম আর আমিন, চট্টগ্রাম

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ভুয়া বিল-ভাউচারে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গত এক মাসেও কোনো মামলা হয়নি।এদিকে বিলের নামে কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে।এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভুয়া বিলে তুলে নেওয়া ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গত এক মাসেও এ টাকা ফেরত পায়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

সরকারি এ টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হয়নি দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা। এমনকি এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায়ও কোন মামলা হয়নি।সবার সন্দেহের তীর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান অর্থ উপদেষ্টা ও হিসাব কর্মকর্তা রফিকুল বারী খানের দফতরের অস্থায়ী কম্পিউটার অপারেটর হাবীবুল্লাহ খান হাবিবের দিকে।ধারণা করা হচ্ছে হাবীবই সমস্ত ডকুমেন্ট বিল পাসের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে ঢুকে এন্ট্রি দিয়েছেন। তবে হাবিব কার নির্দেশনা মেনে এ কাজ করেছেন তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনার পর থেকে হাবিব কর্মস্থলে অনুপস্থিত।

কর্মকর্তারা বলছেন-হাবিব পলাতক।তবে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা দামাচাপা দেয়ার জন্য রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কিছু কর্মকর্তা শুরু থেকে উঠে পড়ে লেগেছে।এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, তদন্তেও টাকা আত্মসাতে হাবিবের সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে।এ ঘটনা তদন্তে গত ৮ ফেব্রুয়ারি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জয়শ্রী মজুমদার রশ্মিকে এ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। এতে হিসাবরক্ষক আব্দুল্লাহ আল আসিফকে সদস্যসচিব, সুগ্রীব চাকমা ও মো. জহিরুল ইসলামকে সদস্য করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।

কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জয়শ্রী মজুমদার বলেন, আমরা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দিয়েছি। তদন্তে যা পেয়েছি তাই আমরা প্রতিবেদনে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আমার জানা নেই।রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী অর্থ উপদেষ্টা ও হিসাব কর্মকর্তা মো. সোহাগ মীর বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে সম্প্রতি এ ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাকে বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করার জন্য কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমি ইতিমধ্যে পর পর তিনবার মামলা দায়ের করার জন্য কোতোয়ালি থানায় গিয়েছি।

তবে থানা পুলিশ আমার মামলা গ্রহণ করেনি।কোতোয়ালি থানা পুলিশ মামলার পরিবর্তে একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) গ্রহণ করেছে। যার নম্বর-২০২৭।তিনি আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে অস্থায়ী কম্পিউটার অপারেটর হাবীবুল্লাহ খান হাবিবসহ সীমান্ত ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার কর্মকর্তাদের যোগসূত্র পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়েদুল হক বলেন, রেলওয়ের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি। তবে এ মামলা থানা পুলিশের এখতিয়ারভুক্ত নয়, সরকারি অফিসের টাকা-পয়সা আত্মসাতের বিষয়টি দুদকের শিডিউল ভুক্ত।এ কারনে মামলাটি থানায় নয়, দুদকে করতে হবে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, অর্থ বিভাগ থেকে ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আমি নিদর্শনা দিয়েছি যারা এ টাকা আত্মসাতে জড়িত তাদের প্রত্যেকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন