ডার্ক মোড
Tuesday, 30 April 2024
ePaper   
Logo
পটুয়াখালীতে সাবেক ইউপি সদস্যের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

পটুয়াখালীতে সাবেক ইউপি সদস্যের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

মৃত্যুর পূর্বে মুখে বিষ ও দেহের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলেও বাচানো গেল না সাবেক ইউপি সদস্যের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী মোসাঃ আরিফা বেগম (২৫)কে। গুঞ্জন আছে পেটে আঘাতের পর মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিল দুই সন্তানের জননীকে। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালী সদরের বাধঘাট এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আল আমিন খানের নিজ ঘরে।

মঙ্গলবার (১৬ই এপ্রিল) দুপুর ১১:৫০ এর দিকে মুমূর্ষ আরিফাকে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে তার স্বামী মোঃ আল আমিন খান সহ প্রতিবেশীরা। জরুরি বিভাগ থেকে হাসপাতালে এফ এম ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হয়ে বেলা ২:১৫ দেখে মারা যায়। আরিফার বাবার বাড়ির লোকজনদের খবর দিলে মৃত্যুর সংবাদ শুনে ৩টার পর হাসপাতালে ছুটে আসে। পুরো ঘটনাটি একটি রহস্যজনক বলে মনে করেছে স্থানীয়রা। মোঃ আল আমিন খান পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার।

জানা যায়, প্রায় দশ বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছিল আল আমিন খান ও আরিফার। দরিদ্র পিতা মাতার সন্তান আরিফার বিয়ের পর ধর্নাট্য পরিবারের ছেলে আলামিন খানের ঘরে এসে মানিয়ে নিতে খুবই বেগ পেতে হয়। তবুও বেশ ভালই চলছিল তাদের সুখের সংসার। এরই মধ্যে তাদের কোল জুড়ে আসে দুটি ছেলে।

প্রথম ছেলের বয়স ৯ বছর এবং দ্বিতীয় ছেলের বয়স সাড়ে চার বছর। দ্বিতীয় সন্তান জন্মের পরই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ প্রায় লেগে থাকত। প্রেমের সম্পর্কের বিয়ের কারণে আলামিন খানের বাবা কঠিন শর্তে তার পুত্রবধূকে মেনে নেয়। অন্যতম শর্ত হলো কোন অবস্থাতেই বাবার বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখা যাবে না।

আলামিনের সংসার পুরানো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরিফা প্রায় দিন তার দরিদ্র পিতার পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। এজন্যই তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। বন্ধ করে দেয়া হয় বাবার বাড়ির সাথে যোগাযোগ। নির্যাতন সহ্য করেও মুখ ফুটে কারো কাছে বলার মত সুযোগ ছিল না তার। ঘটনার দিন সকালেও প্রতিবেশীদের সাথে কুশল বিনিময় করে তবে এরপর কিভাবে ঘরের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটলো কেহই বলতে পারেনা।

আরিফার মা জানায়, আমার সাথে সকালেও কথা হয়েছে তারপর কি হলো আমি কিছুই জানিনা। মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসে। আমি মনে করি আমার মেয়ের মৃত্যু স্বাভাবিক।

আরিফার সারে চার বছরের সন্তান বলে, মা গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়ে বমি করেছে, মরার জন্য গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েছে, বাবা রাগারাগি করে সেজন্য মরতে চায়।

আরিফা স্বামীর সাবেক ইউপি সদস্য আলামিন খান জানায়, আমি তো অপরাধী সমস্যা নাই তো। আমি আর আপনার সাথে কথা বলবো না মুড নাই।

কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবু বক্কর সিদ্দিক জানায়, মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির পর বিষক্রিয়ায় তাহার মৃত্যু হয়।

পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জসীম জানায়, পুলিশের মাধ্যমে লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তী সকল আইনি ব্যাপার প্রক্রিয়াধীন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন