ডার্ক মোড
Monday, 13 May 2024
ePaper   
Logo
পটুয়াখালীতে আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের রড ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ

পটুয়াখালীতে আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের রড ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ

পটুয়াখালী প্রাতনিধি

ট্রাক ড্রাইভার আল-আমিন(৩৩)কে হত্যা করে ট্রাকে থাকা একেএস কোম্পানির রড ছিনতাই করার ঘটনায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মাসুদ রানাকে রহস্য জনক কারনে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে বাউফলের দাসপাড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানার একতা এন্টারপ্রাইজের গোডাউন থেকে ছিনতাইকৃত ১৩মেট্রিকটন রডের প্রায় ৯মেট্রিকটন রড বাউফল থানা পুলিশের সহায়তায় দশমিনা হাজির হাট নৌ-পুলিশ উদ্ধার করে।

তবে এঘটনায় পুলিশ একতা এন্টার প্রাইজের ম্যানেজার নান্নু মিয়া (৪৫), কর্মচারী দিলিপ (৫০) ম্যানেজার শাহাদুলকে (৪০) এবং দশমিনা উপজেলার ৬৯নম্বর মধ্য জৌতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও বিশিষ্ট ঠিকাদার মো. মজিবর রহমানকে আটক করলেও রহস্য জনক কারনে ছিনতাই কৃতরড উদ্ধারকৃত গোডাউনের মালিক মাসুদ রানাকে আটক করেনি পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী মো. সবুজ মিয়া।

এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দশমিনা নৌ-পুলিশের এসআই আল-মামুন বলেন, ট্রাকের ড্রাইভার আল আমিনকে খুন করে ঘাতকরা রডগুলো কালাইয়া বাজারের একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানার কাছে নগদ টাকায় বিক্রি করে দেয়। মাসুদ রানা ওই রডগুলো গুদামে রেখে দেন। তদন্তের একপর্যায়ে নিশ্চিত হয়েই রডগুলো মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে ওই গুদাম থেকে জব্দ করা হয়। অপরদিকে রড পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাকটি বাকেরগঞ্জের বোয়ালিয়া বাহাদুরপুর এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এবিষয়ে দশমিনা হাজির হাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আক্তার হোসেন বলেন, এঘটনায় ৪জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গুরুত্বের সাথে মামলার তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের আইন আমলে আনা হবে।

ছিনতাইকৃত রড ক্রয়ের ব্যাপারে মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, আমি মজিবর নামের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে রডগুলো ক্রয় করেছি। তিনি (মজিবর) আমার পূর্ব পরিচিত। রডগুলো ছিনতাইকৃত কিনা তা আমার জানা ছিল না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আল আমিনকে পরিকল্পিতভাবে খুনের পর রড ছিনতাই করা হয়েছে। আর ছিনতাইকৃত রড পাওয়া গেছে একতা এন্টারপ্রাইজে। সুতরাং একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানা কোনো ভাবেই দায় এড়াতে পারেন না।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, বিষয়টি দশমিনা থানার। রড উদ্ধারের সময় আমরা সহযোগীতা করেছি মাত্র। এর বাইরে আর কিছুই বলতে পারছি না।

এবিষয়ে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তে যারা অপরাধী প্রমানিত হবে তাদের প্রত্যেকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের আবুল খায়ের ইন্ডাট্রিজ এর কারাখানা থেকে ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৫১৩৮ নম্বরের একটি ট্রাক ১৩ মেট্রিকটন রড নিয়ে বাউফলের কালিশুরী বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পরের দিন ১৮ এপ্রিল কালিশুড়ীর খান এন্টারপ্রাইজে রডগুলো আনলোড করার কথা। কিন্তু ১৮ এপ্রিল ট্রাকের ড্রাইভার আল-আমিনকে ফোন করে বন্ধ পান তার মামা ট্রাকের মালিক মো. সবুজ।

২০ এপ্রিল দশমিনার নদীতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে দশমিনা নৌ পুলিশ। পরে মামা সবুজ খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন ওই লাশ তার ভাগ্নে আল-আমিনের। ময়নাতদন্ত শেষে আল আমিনের লাশ চাঁদপুরে নিয়ে দাফন করা হয়।

এব্যাপারে দশমিনা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন আল-আমিনের মামা সবুজ। এরপরই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশের একাধিক টিম।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন